কারচুপি করে ধনী? রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই সংস্থার আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে বড় পতন, বিপদে LIC

কারচুপি করে ধনী? রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই সংস্থার আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে বড় পতন, বিপদে LIC

imagesmissing

কলকাতা: ‘কর্পোরেট জগতের সবচেয়ে বড় জালিয়াতি’! ধোঁকাবাজি করে নিজেদের সংস্থার শেয়ার দর বাড়িয়েছে ভারতের অন্যতম ধনী গৌতম আদানির গোষ্ঠী! আমেরিকার লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চে’র রিপোর্টে বাণিজ্যিক মহলে শোরগোল৷ রাতারাতি মুখ থুবড়ে পড়ছে আদানি গোষ্ঠীর সংস্থাগুলির শেয়ার দর। হু হু করে নেমেছে সেনসেক্স। যার জেরে একদিনেই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি খোয়াতে হল এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি গৌতম আদানিকে৷ একদিনে তাঁর ক্ষতির পরিমাণ ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৪৫ হাজার কোটি টাকা৷

আরও পড়ুন- সাড়ে ১২ হাজার টাকা বিনিয়োগ করলেই কোটিপতি! নেপথ্যে এই সরকারি প্রকল্প

মার্কিন ফিন্যান্সিয়াল রিসার্চ সংস্থার রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পরই বিত্তবানদের তালিকায় পতন হয়েছে শিল্পপতি গৌতম আদানির। এক ধাক্কায় বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় ৪ ধাপ নেমে সপ্তম স্থানে চলে এসেছেন তিনি। কিন্তু, কেন এই পতন? আমেরিকার ওই সংস্থার রিপোর্টে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ করা হয়েছে?

ওই মার্কিন সংস্থার দাবি, কারচুপি করে নিজেদের সংস্থাগুলির শেয়ার দর বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। দু’বছর তদন্ত চালানোর পর তারা এই তথ্য জানতে পেরেছে৷ ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চে’র রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, গত এক দশক ধরে নিজেদের বিভিন্ন সংস্থার শেয়ারের দাম কৃত্রিম ভাবে বাড়িয়েছে আদানি গোষ্ঠী। গত ৩ বছরে কারচুপি করে গৌতম আদানির ১২ হাজার কোটি ডলারের নিট সম্পদের ১০ হাজার কোটি এসেছে।

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, আদানি গ্রুপের ঘাড়ে প্রচুর ঋণ রয়েছে যা এই প্রতিষ্ঠানের আর্থিক ভিত্তিকে নড়বড়ে করে তুলেছে। হিনডেনবার্গ তাদের রিপোর্টে মরিশাস এবং আরব আমিরশাহির মতো কিছু দেশে বিভিন্ন ট্যাক্স হেভেনে বিভিন্ন কোম্পানিতে আদানি গোষ্ঠীর মালিকানা থাকার ব্যাপারেও ইঙ্গিত করেছে।

ওই দেশগুলিতে আয়কর ছাড়ের বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়। অভিযোগ, ওই ভুয়ো সংস্থাগুলির মাধ্যমে বেআইনি লেনদেনের পাশাপাশি কর ফাঁকি দেওয়া হয়েছে। কৃত্রিম ভাবে শেয়ারের দর কয়েক গুণ বাড়িয়ে বিশাল সম্পদ বানিয়েছে আদানিরা। গত ৩ বছরের পরিসংখ্যান দেখলে বোঝা যাবে, এই তিন বছরে আদানির শেয়ার সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে ৮০০ শতাংশের বেশি।

হিন্ডেনবার্গ সংস্থার দাবি, এই সংক্রান্ত গবেষণার সময় তাঁরা আদানি গোষ্ঠীরই কয়েক জন প্রাক্তন উচ্চপদস্থ কর্তার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। সেই সঙ্গে খতিয়ে দেখেন কয়েক হাজার নথি৷ সব দিক খতিয়ে দেখার পর এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে।
 

যদিও মার্কিন লগ্নি সংক্রান্ত গবেষণাকারী সংস্থা ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চে’র এই রিপোর্ট ‘মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ বলে দাবি করেছে আদানি গোষ্ঠী। তাঁদের পাল্টা অভিযোগ, আদানি গোষ্ঠীর ভাবমূর্তি নষ্ট করে লগ্নিকারীদের বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের বিরুদ্ধে ‘শাস্তিমূলক পদক্ষেপ’ করতেও তৎপর হয়ে উঠেছে আদানিরা।
 

আদানিদের সংস্থায় এলআইসি (জীবন বিমা নিগম)-এর প্রভুত লগ্নি রয়েছে। এ ছাড়াও স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ওই গোষ্ঠীর ঋণ রয়েছে। ‘হিন্ডেনবার্গ রিসার্চে’র এই রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসতেই আদানিদের শেয়ার দরের পতন ঘটছে৷ এমন পতনে বিপদে পড়তে পারেন সাধারণ মানুষ।