ওডিশা: ঝাড়খণ্ড ওডিশা কিংবা পশ্চিম বাংলার মালভূমি এলাকার বিস্তীর্ণ বন জঙ্গল প্রাচীনকাল থেকেই দেশের সম্পদ। এর সঙ্গেই মিশে রয়েছে বীরসা মুণ্ডা, সিধু কানহুর ‘অরণ্যের অধিকারের’ স্মৃতি। কিন্তু দেশের বনজ সম্পদের এহেন উৎসই এখন ধ্বংসের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। বেশ কয়েক দিন ধরেই লাগাতার জ্বলছে ওডিশার জঙ্গল।
সপ্তাহ খানেক আগে আগুন লেগেছে ওডিশার ময়ূরভঞ্জ জেলার সিমিলিপাল ন্যাশানাল পার্কের টাইগার রিজার্ভ ফরেস্টে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত সে আগুন নেভানো যায়নি। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে একটানা জ্বলছে ওই জঙ্গল। সূত্রের খবরে জানা গেছে, জঙ্গলের মোট ২১টি রেঞ্জের মধ্যে ৮টিই পুড়ে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে, যা গোটা জঙ্গলের তিন ভাগের এক ভাগ। এভাবে চলতে থাকলে আর বেশিদিন যে জঙ্গল থাকবে না, তা বলাই বাহুল্য। জঙ্গলের এই বিধ্বংসী আগুন তাই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে স্থানীয়দের কপালেও।
তবে সিমিলিপাল ন্যাশানাল পার্কের জঙ্গলের দাবানল কাণ্ডে এ পর্যন্ত কোনো প্রাণহানি ঘটেনি, এদিন এক বিবৃতির মাধ্যমে তেমনটাই দাবি করেছে ওডিশা সরকার। রাজ্য সরকারের ওই বিবৃতির বক্তব্য নিয়ে অবশ্য খানিক ধোঁয়াশা রয়েছে। ‘প্রাণহানি’ বলতে মানুষের প্রাণ নাকি পশুপ্রাণের কথা বোঝানো হয়েছে তা স্পষ্ট হয়নি। দাবানলের বিষয়টিকে যে বিশেষ পাত্তা দিতে চাইছে না ওডিশা সরকার তা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়েকের বয়ান থেকেই পরিষ্কার হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, জঙ্গলের আগুন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। বড় বড় গাছগুলিই অক্ষত রয়েছে বলেই দাবি করেছেন তিনি।
দেশের এই বিরাট বনজ সম্পদের আখরায় আগুন লাগার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন এবং আবহাওয়া মন্ত্রী প্রকাশ জাভেদকর নির্দেশ দিয়েছিলেন ওডিশা সরকারকে। তারপরেই পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে যান মুখ্যমন্ত্রী প্রবীণ পট্টনায়েক। দাবানল প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, বাঘ হরিণ হাতির মতো বড় বড় পশু আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গে বনভূমির নিরাপদ স্থানে পৌঁছে যেতে পেরেছে। কিন্তু মারা পড়েছে সরীসৃপরা। এছাড়া বহু মূল্যবান গাছগাছালিও ভস্মীভূত হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।