এক সঙ্গে রাজ্যের পাঁচ শীর্ষ কর্তাকে লোকসভার তলব! কতটা চাপে তৃণমূল?

এক সঙ্গে রাজ্যের পাঁচ শীর্ষ কর্তাকে লোকসভার তলব! কতটা চাপে তৃণমূল?

state officials

নিজস্ব প্রতিনিধি: কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না সন্দেশখালিতে। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে আটকে দিচ্ছে পুলিশ। সরস্বতী পুজোর দিন সন্দেশখালিতে প্রবেশ করতে গিয়ে পুলিশের দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আর সুকান্ত ইস্যুতে এবার নড়েচড়ে বসল লোকসভার সংসদীয় কমিটি। একসঙ্গে রাজ্যের পাঁচ পুলিশ ও প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তাকে তলব করল লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি। রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্য সচিব বিপি গোপালিকা, উত্তর চব্বিশ পরগনার জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদী, বসিরহাট পুলিশ জেলার সুপার হোসেন মেহেদি রহমান এবং অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থ ঘোষকে দিল্লিতে গিয়ে সোমবার হাজিরা দিতে হবে। গোটা বিষয়টিকে লোকসভার সংসদীয় কমিটি যে কতটা গুরুত্ব দিচ্ছে এতেই তা স্পষ্ট। স্মরণ কালে এমন ঘটনা দেখা যায়নি। একজন সাংসদ এভাবে পুলিশের বাধায় অসুস্থ হয়ে পড়বেন তা একেবারেই ভাল চোখে দেখছে না লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি। বিষয়টিকে তারা এতটাই সিরিয়াসলি নিয়েছে যে এক সঙ্গে রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশের এতজন শীর্ষস্থানীয় কর্তাকে জরুরি ভিত্তিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে দিল্লিতে। যা নিঃসন্দেহে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ।

সন্দেশখালিতে যে নারী নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে তাতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে। বুধবার সরস্বতী পুজোর দিন সন্দেশখালি যেতে বদ্ধপরিকর ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। উল্টো দিকে তাঁকে আটকাতে মরিয়া ছিল পুলিশ। একটা সময় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ হয়ে পড়েন সুকান্ত। একেবারে অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যান রাজ্য বিজেপি সভাপতি। ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পরেন রাজ্য বিজেপির নেতাকর্মীরা। জরুরি ভিত্তিতে সুকান্তকে প্রথমে বসিরহাট জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু আরও উন্নত চিকিৎসার লক্ষ্যে বুধবার বিকেলেই অত্যাধুনিক অ্যাম্বুল্যান্সে করে সুকান্তকে কলকাতার ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন তিনি। সব মিলিয়ে বুধবার সরস্বতী পুজোর দিন উত্তাল হয়ে ওঠে বসিরহাট। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশ এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল যাতে সুকান্তের প্রাণ সংশয় দেখা দেয়। এক পুলিশকর্মী সুকান্তকে গাড়ির বনেটে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় জোর করে টেনে নামানোর চেষ্টা করলে তিনি পড়ে যান বলে বিজেপি কর্মীদের দাবি। আর মাটিতে পড়ে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণের জন্য অজ্ঞান হয়ে যান সুকান্ত। শরীরের একাধিক জায়গায় আঘাত লেগেছে তাঁর, এমনটাই হাসপাতাল সূত্রে খবর।

গোটা বিষয়টি নিয়ে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছিল সুকান্তের তরফে। এরপরই কড়া পদক্ষেপ করল লোকসভার স্বাধিকার রক্ষা কমিটি। যে ঘটনায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। আসলে সন্দেশখালির ঘটনা পশ্চিমবঙ্গ ছাড়িয়ে দিল্লি তথা কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে অন্যতম চর্চার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে। যা তৃণমূলের পক্ষে একেবারেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়। এই পরিস্থিতিতে লোকসভার সংসদীয় কমিটি তৃণমূল সরকারকে কড়া বার্তা দিতে চেয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে। জানা গিয়েছে কীভাবে সরস্বতী পুজোর দিন সুকান্ত মজুমদারকে ঘিরে ওই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তা পাঁচ কর্তার কাছ থেকে জানতে চাইবে সংসদীয় কমিটি। রাজ্যের পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা যে এ বিষয়ে তাঁদের দায় এড়িয়ে যেতে পারেন না, তা তুলে ধরবেন কমিটির সদস্যরা। যা লোকসভা নির্বাচনের আগে যথেষ্টই অস্বস্তিতে ফেলল তৃণমূলকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three + 17 =