নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার পরই দ্রুত নড়েচড়ে বসল রাজ্য সরকার। একাধিক তৃণমূল নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল পুলিশ। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্য প্রশাসনের এই তৎপরতা অতীতে দেখা যায়নি বলেই ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে। উল্লেখ্য জিটিএ-র শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে রাজ্য সরকার। পার্থের পাশাপাশি এফআইআর-এ নাম রয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য, ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতি প্রান্তিক চক্রবর্তী, তৃণমূল কাউন্সিলর বুবাই বসু, দেবলীনা দাস, পাহাড়ের নেতা বিনয় তামাং-সহ সাত জনের। এই প্রথম শিক্ষক নিয়োগ মামলায় রাজ্যের তরফে অভিযোগের ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়েছে। রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দফতর বিধাননগর উত্তর থানায় বুধবার জিটিএ-র স্কুলে নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছে। তার ভিত্তিতেই এফআইআর দায়ের হয়েছে।
পাহাড়ে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গত মঙ্গলবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানি বিচারাধীন রয়েছে হাইকোর্টে। এরই মধ্যে একটি রহস্যজনক চিঠি আসে হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর কাছে। সেখানে রাজ্যের একাধিক নেতা, মন্ত্রী-সহ নাম ছিল পাহাড়ের নেতাদের। চিঠিতে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, জিটিএ আওতাধীন এলাকায় বিভিন্ন স্কুলে বেআইনিভাবে নিয়োগ করা হয়েছিল। জানা যায় শিক্ষা দফতরের এক পদস্থ কর্তা বিধাননগর পুলিশের কাছে এ বিষয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করেনি বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে বিচারপতি বসু মন্তব্য করেছিলেন,”আমার মনে হচ্ছে পুলিশ কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করছে।” এরপরই বিষয়টি নিয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি বসু।
পাহাড়ের এই দুর্নীতি ২০২২ সালে প্রকাশ্যে আসে। কিন্তু এরপরেও রাজ্য প্রশাসন কেন হাত গুটিয়ে বসেছিল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। আর যেই মাত্র কলকাতা হাইকোর্ট সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিল, ঠিক তখনই তেড়েফুঁড়ে নেমে সাত জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করল রাজ্য পুলিশ! কেন এখন এই তৎপরতা? এই তৎপরতা দু’বছর আগে দেখা যায়নি কেন? সত্যিই কী রাজ্য প্রশাসন কাউকে আড়াল করার চেষ্টা করেছিল? এই সমস্ত প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। এই পরিস্থিতিতে সিবিআই তদন্তে নতুন করে কী তথ্য উঠে আসে এখন সেটাই দেখার।