কলকাতা: দেশ তথা রাজ্যের রেশন ব্যবস্থায় আসতে চলেছে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন৷ আগামী এপ্রিল মাস থেকে রেশন গ্রাহকের আঙুলের ছাপ মিলিয়েই চাল এবং গম দেওয়া হবে সরকারি ভর্তুকিতে৷ আঙুলের ছাপ মিলিয়ে দেখা হবে ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রের সাহায্যে৷ রাজ্যের খাদ্য দপ্তর সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে৷
বেশকয়েকদিন ধরেই রাজ্য জুড়ে আধার কার্ডের সঙ্গে রেশন কার্ডের সংযুক্তিকরণের প্রক্রিয়া চলছে৷ খাদ্য দপ্তরের মূল লক্ষ্য, প্রকৃত রেশন গ্রহীতা যেন কোনোভাবেই সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত খাদ্যশস্য থেকে বঞ্চিত না হন৷ জানা গিয়েছে, প্রায় সাড়ে ৭ কোটি রেশন গ্রহীতার আধার নম্বরের সাথে রেশন কার্ডের নম্বর সংযুক্তীকরণ হয়েছে৷ আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই সংযুক্তিকরণের প্রক্রিয়া জোর কদমে চলবে৷ গ্রাহকদের আঙুলের ছাপ যাচাই করে নেওয়ার জন্য প্রতিটি রেশন দোকানে ইলেকট্রনিক পয়েন্ট অফ সেলস (ই-পস) রাখা হবে৷ তবে তার আগে আধার কার্ড সংযুক্তিকরণ প্রয়োজন৷ খাদ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই সপ্তাহের দু’দিন রেশন দোকানে গ্রাহকদের আঙুলের ছাপ সংগ্রহের জন্য বরাদ্দ করা হবে৷
প্রতিবার রেশন তোলার সময় দোকানে গিয়ে আঙুলের ছাপ মিললেই পাওয়া যাবে প্রাপ্য রেশন৷ কিন্তু আঙুলের ছাপ না মিললে পাওয়া যাবে না রেশন৷ রাজ্যে এখন রেশন দোকানে ই-পাস মেশিন বসানোর কাজ প্রায় শেষ৷ এখন থেকে ওই মেশিনের মাধ্যমে সংযুক্ত করতে হবে আধার কার্ড৷ রেশন গ্রাহকদের পরিবারের সব সদস্যকে তাঁদের রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড নিয়ে দিতে হবে রেশন দোকানে৷
প্রথম পর্যায়ে আধার কার্ডের নম্বর দিয়ে আধার সিডিং করাতে হবে৷ তারপর পর্যায়ক্রমে আঙুলের ছাপ দিলে আধার অথেন্টিকেশন করাতে হবে৷ এরপর থেকে রেশন দোকানে গিয়ে আঙুলের ছাপ মিললে ওই পরিবার বা ব্যক্তির প্রাপ্য চাল গম আটা দেওয়া হবে৷ ওই মেশিন থেকে দামের রশিদ বেরিয়ে আসবে৷ সেই কাগজ বের হবে তখনই যখন আঙুলের ছাপ মিলবে৷ না মিললে কোনও ভাবেই রেশন সামগ্রী পাওয়া যাবে না বলে জানা গিয়েছে৷
আঙুলের ছাপ দিয়ে রেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়া চালু হলে, গ্রাহকের রেশন সংগ্রহের সাথে সাথেই খাদ্য দফতরের রেকর্ডে তা অনলাইন নথিভূক্ত হয়ে যাবে৷ এইভাবেই বিনা বাধায় যোগ্য গ্রাহকের কাছে সরকারী ভর্তুকিতে খাদ্যযোগ্য দানা শস্য সহজে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ এবং এইভাবে সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত খাদ্য শস্য চোরা চালান বন্ধ করাও সম্ভব হবে৷ ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে গ্রাহকের আঙুলের ছাপ যাচাই করে রেশনে খাদ্য শস্য বন্টনের খাদ্য দফতরের নয়া উদ্যোগ কতটা লাভজনক হয় সেটাই দেখার৷