বিশ্বকাপ কি সত্যই সোনার তৈরি? এর মূল্য কত? আসল ট্রফি কি দেশে নিয়ে যেতে পারবেন লিয়োরা?

বিশ্বকাপ কি সত্যই সোনার তৈরি? এর মূল্য কত? আসল ট্রফি কি দেশে নিয়ে যেতে পারবেন লিয়োরা?

677ef87f89a02c9aecfc9e795a43fcba

কলকাতা: ৩৬ বছর পর অবশেষে অপেক্ষার অবসান৷ নীল-সাদা রঙে সোনালি ট্রফি মুড়ে লাখো অনুরাগীর স্বপ্ন পূরণ করেছেন ফুটবলের জাদুকর৷ সেই সঙ্গে পূর্ণ হয়েছে একটা বৃত্ত৷ জীবনের শেষ বিশ্বকাপে পূর্ণ হয়েছে প্রাপ্তির ঝুলি৷ ফ্রান্সকে পেনাল্টি শুটআউটে হারিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছে লিয়োনেল মেসির আর্জেন্টিনা৷  

আরও পড়ুন- স্বপ্নের আরব্য রজনীতে লেখা হল রূপকথা! কিন্তু জানেন কি বিশ্বকাপ থেকে কত আয় করল ফিফা?

দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক কেরিয়াকে একমাত্র অপ্রাপ্তি ছিল বিশ্বকাপ৷ যাঁর বা পায়ের জাদুতে বুঁদ গোটা বিশ্ব, যাঁকে সবর্বকালের সেরাদের একজন বলে মেনে নিয়েছে ফুটবল দুনিয়া, সেই মেসির ক্রিড়া জীবনে ইতি পড়বে বিশ্বকাপ ছাড়া? এত বড় নির্দয় হতে পারেনি ফুটবল দেবতাও৷ বিশ্বকাপ জিততে না পারলেও মেসির ঔজ্জ্বল্য একটুকু কমত না৷ কিন্তু এই শিরোপা তাঁকে এনে দিল শ্রেষ্ঠত্বের স্বীকৃতি৷  

ফুটবলার এবং ফুটবলপ্রেমী সকলের কাছেই ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপের ট্রফি একটি ভিন্ন মাত্রার নান্দনিক শিল্প। ফুটবলের সর্বসেরা এই ট্রফির রূপকথা ক্রীড়াবিদদের সর্বদাই অনুপ্রাণিত করে। কিন্তু বিজয়ী দল কি সত্যই ঘরে নিয়ে যায় বিশ্বকাপের আসল ট্রফি? 

ফাইনাল ম্যাচের পর বিজয়ী দলের হাতে যে ট্রফিটি তুলে দেওয়া হয়, তার গল্পটা কিন্তু বেশ মজাদার। বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার ফুটবলাররা যে ট্রফিটি হাতে তুলে বাধভাঙা উচ্ছ্বাসে মাতল, সেই ট্রফিটি কিন্তু ফিরিয়ে দিতে হয়েছে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেই৷ লিয়োরা কিন্তু আসল ট্রফিটি নিয়ে দেশে ফিরতে পারবেন না৷ এর বদলে তাঁদের দেওয়া হবে ওয়াল্ড কাপের একটি রেপ্লিকা। যা হুবহু বিশ্বকাপ ট্রফির মতোই দেখতে৷ তবে এটি তৈরি করা হয়  ব্রোঞ্জ দিয়ে। উপরে থাকে সোনার জল করা রং৷

ফিফার আসল ট্রফিটা অধিকাংশ সময়েই থাকে জুরিখে৷ সেখানেই ফিফার হেড কোয়ার্টার৷  ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ট্যুর কিংবা ওয়ার্ল্ড কাপ ফাইনালের সময় এই ট্রফিটি ফুটবল বিশ্বের সামনে নিয়ে আসা হয়। যা বিজয়ী দল হাতে তুলে নিলেও, দেশে নিয়ে যেতে পারে না৷ ২০০৫ সালে এমনই নিয়ম তৈরি করেছিল ফিফা৷ 

১৯৩০ সালে প্রথমবার বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজন করা হয়েছিল। সেইসময় বিজয়ী দলকে যে ট্রফি দেওয়া হয়েছিল তার নাম ছিল জুলে রিমে ট্রফি। ১৯৭০ সাল পর্যন্ত জুলে রিমে ট্রফিই দেওয়া হত বিশ্বকাপের বিজয়ী দলকে৷ এরপর বিশ্বকাপের ট্রফিকে নতুন করে সাজানো হয়। ১৯৭৪ সাল থেকে যে ট্রফি দেওয়া হয় তারই নাম  ফিফা ওয়ার্ল্ড কাপ ট্রফি৷

এই ট্রফির ওজন প্রায় ৬.১৭৫ কেজি৷ ১৮ ক্যারেট সোনা (৭৫ শতাংশ) দিয়ে তৈরি করা হয় বিশ্বকাপ৷ এর উচ্চতা ৩৬.৮ সেন্টিমিটার৷ ব্যাস ১৩ সেন্টিমিটার৷ বিশ্বকাপ ট্রফির বেস তৈরি করা হয় মেলাকাইট স্টোন দিয়ে৷ ১৯৯৪ সালে এই ট্রফিতে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়৷ ট্রফির নীচের অংশে একটি প্লেটে লিখে দেওয়া হয় বিজয়ী দলের নাম।

বিশ্বকাপ ট্রফি তৈরির সময় এর মূল্য ছিল ৫০ হাজার মার্কিন ডলারের কাছাকাছি। এখন এর দাম ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আপনাদের মনে করিয়ে দিই, এই ট্রফির পাশাপাশি বিশ্বকাপে সেরার সেরা শিরোপা ছিনিয়ে বিজয়ীরা প্রাইজ মানি হিসাবে পাবেন ৪২ মিলিয়ন ডলার৷ ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য ৩৪৭ কোটি টাকা৷ রানার্সরা পাবেন ২৪৮ মিলিয়ন ডলার বা ২৪৮ কোটি টাকা৷