মনোনয়ন ঘিরে ‘অগ্নিগর্ভ’ ভাঙড়! বোমার মুখে পিছু হঠল পুলিশও

মনোনয়ন ঘিরে ‘অগ্নিগর্ভ’ ভাঙড়! বোমার মুখে পিছু হঠল পুলিশও

আইএসএফ-এর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। বিডিও অফিসের সামনেই বোমার গর্জন। চলল ‘গুলি’। লাঠি, বাঁশ নিয়ে চলল বেধড়ক মারধর। কোথায় ১৪৪ ধারা? কোথায় নিরাপত্তা? কী-ই বা করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন?  ভাঙড়ে মনোনয়ন ঘিরে অশান্তিতে উঠছে একাধিক প্রশ্ন।

স্থানীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার সকালে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বে ভাঙড়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান আইএসএফ কর্মীরা।অভিযোগ, বিডিও অফিসের সামনেই তৃণমূল কর্মীরা আগে থেকে জমায়েত করে ছিলেন। আইএসএফ কর্মীরা আসতেই ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয় বলে অভিযোগ। পুলিশি নিরাপত্তায় মোড়া বিডিও অফিসের এক কিলোমিটারের মধ্যে মুড়ি-মুড়কির মতো বোমা পরে বলে অভিযোগ… চলে গুলি! মুহূর্তেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পুলিশকে লক্ষ্য করে অবিরাম বোমাবাজি ও ইটবৃষ্টির অভিযোগ ওঠে। বোমার মুখে প্রাথমিকভাবে পিছু হঠে পুলিশ। রক্তাক্ত হন কাশীপুর থানার এক এসআই। কাঁদানে গ্যাসের শেল ফাটিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে পুলিশ। 

মঙ্গলবার ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে যাচ্ছিলেন আইএসএফ কর্মীরা। সেই সময় তাঁদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আইএসএফ এবং তৃণমূল কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিজয়গঞ্জ বাজার। দু’পক্ষের মধ্যে চলে বোমাবাজি। মুড়ি মুড়কির মতো এলাকায় বোমা পড়ে বলে অভিযোগ। এমনকি এলাকায় ৭ রাউন্ড গুলিও চলে। বোমার স্প্লিন্টারে এক আইএসএফ প্রার্থী আহত হন।  

আইএসএফ কর্মীদের অভিযোগ, মনোনয়ন আটকাতে তাঁদের লক্ষ্য করে বোমাবাজি শুরু করে তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা। লাঠি, বাঁশ দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয়। হামলা নিয়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলেছে আইএসএফ। যদিও তৃণমূল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রার্থীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মনোনয়ন কেন্দ্রের একশো মিটার রেডিয়াসের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। কিন্তু, এদিন পুলিশি নিরাপত্তার ঘেরাটোপেই দেখা গেল বোমাবাজির ঘটনা। কার্যত কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় এলাকা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশ। 

ভাঙড়ের বিধায়ক নৌশাদ সিদ্দিকির দাবি, তাঁদের প্রার্থীদের মনোনয়ন আটকাতেই তৃণমূল এই হামলা চালিয়েছে। তিনি বলেন, “আইন লঙ্ঘন হোক, এরকম কোনও কাজ আমরা করব না। কিন্তু যারা অশান্তি করছে, মনোনয়ন জমা দিতে দিচ্ছে না, তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। এটাই আশা করছি। তৃণমূল তো বোমা-গুলি-পিস্তল নিয়ে তৈরি, যাতে আমরা এলেই হামলা চালায়।” 

ইতিমধ্যেই, ভাঙড়ের ঘটনায় জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। মঙ্গলবার ভাঙড় থেকে শুরু হতে চলেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় তৃণমূলের ‘নবজোয়ার যাত্রা’ কর্মসূচি। সেই কর্মসূচি উপলক্ষে নিজের গড় দক্ষিণ ২৪ পরগনায় উপস্থিত থাকার কথা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু, অভিষেকের কর্মসূচির আগেই রণক্ষেত্র পরিস্থিতি ভাঙড়ে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − fourteen =