কলকাতা: প্রদোষচন্দ্র মিত্র ওরফে ফেলুদা সত্যজিৎ রায় সৃষ্ট বাংলা সাহিত্যের একটি জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র৷ এবার নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন স্বয়ং ফেলুদা? “যারা কাগজ দেখতে চাইছে তারা পার পাবে না লালমোহন বাবু” উক্তি সম্বলিত রাজ্য সিপিআইএমের পোস্ট করা ইতিমধ্যেই স্যোশাল মিডিয়ার সৌজন্যে রীতিমতো ভাইরাল৷ ফেলুদার গল্পে তার চরিত্রকে আঁকা হয়েছে প্রায় ২৭ বছর বয়সী একজন যুবক হিসেবে, যাঁর অসম্ভব ভালো বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষনের ক্ষমতার ওপরেই যে কোনও রহস্যের সমাধানে সে আস্থা রাখতে ভালোবাসে৷ তার এই বিশেষ ক্ষমতাকে সে মজা করে বলে থাকে মগজাস্ত্র৷ সেই অর্থে এই উক্তি দেশের বর্তমান শাসক দলের উদ্দেশ্যে কতটা বার্তাবহ তার প্রমাণ দিচ্ছে স্যোশাল মিডিয়া৷
বর্তমান যুব সমাজ এবং তাঁদের মগজাস্ত্রকে ছোটো করে দেখলে তার পরিনতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে তারা একটা আগাম হুঁশিয়ারি বলা যায়৷ কারণ এইমুহুর্তে নাগরিকত্ব যাচাইকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে যে হারে প্রতিবাদ, বিরোধিতা ও বিশেষত বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে তা নিরসনে যুবসমাজকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থেকে বিরোধী দল এমনকি দেশের বুদ্ধিজীবীমহলও৷ ইতিমধ্যেই দেশের বিভিন্ন রাজ্যের কলেজপড়ুয়ারা দলমত নির্বিশেষে রাস্তায় নেমেছেন নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের প্রতিবাদে৷ আর তাদের এই দলবদ্ধ অবস্থান দিন দিন চোখের কাঁটা হয়ে উঠেছে দেশের শাসক নেতৃত্বদের কাছে৷ এনিয়ে নানান চিন্তা ভাবনাও শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা৷ কখনও কলেজে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, আবার কখনো যুবসমাজের সামাজিক মূল্যবোধ বৃদ্ধি করার জন্য পাঠক্রমের পরিবর্তনের কথা বলা হচ্ছে৷ কখনোবা,গায়ের জোরে ছাত্র যুব সমাজের পথে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ তাঁর ওপর ছাত্রদের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলির প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ তো স্বাভাবিক৷
“কাগজ আমরা দেখাব না” নাগরিকত্বের নথি নিয়ে জনপ্রিয় নবীন ও প্রবীণ শিল্পীদের একটি ভিডিওটি দিনকয়েক আগেই স্যোশাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে৷ নাগরিকত্ব প্রমাণের নথি নিয়ে একের পর এক দাবিকেই এখানে কাগজ বলা হচ্ছে৷ এবার বামেদের তরফ থেকেও সেই একই দাবিতে পোস্ট৷ কিন্তু প্রতিবাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দেশের সাশকদলেল জেদ তার প্রমাণ হিসেবে উত্তরপ্রদেশে শুরু হয়ে গেছে বৈধ নাগরিক যাচাইকরণ প্রক্রিয়া৷ সব রাজ্যের পাশাপাশি এরাজ্যেও আইন প্রয়োগ হবেই এমনটাই জানানো হয়েছে৷ বাড়ি বাড়ি গিয়ে সাধারণ মানুষের মগজধোলাইয়ের ব্যবস্থাও করা হয়েছে৷ হীরক রাজার মগজধোলাই মেশিনের সামনে এখন ফেলুদার মগজাস্ত্রই পারে দেশের কোটি কোটি নাগরিকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করতে৷ যা এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা৷