বাবা হচ্ছেন সুনীল ছেত্রী। সোমবার ওড়িশার কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ভানুয়াতুর বিরুদ্ধে জয়ের পর সেই খবর নিজেই সবার সঙ্গে ভাগ করে নিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক। সুনীলের গোলেই ভানুয়াতুর বিরুদ্ধে জয় পেয়েছে ভারত। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে গোল করে জয় নিশ্চিত হতেই জার্সির ভিতর বল ঢুকিয়ে ‘সুখবর’ দেন সুনীল। গোল করার পরেই গ্যালারিতে উপস্থিত সন্তানসম্ভবা স্ত্রীর দিকে উড়ন্ত চুম্বন ছুঁড়ে দেন…পাল্টা চুম্বন ছুঁড়ে দেন সোনমও। এরপর অবশ্য বুঝতে অসুবিধা হয়নি যে তাঁদের সংসারে নতুন অতিথির আগমন ঘটতে চলেছে। মাঠ থেকে ভক্তদের সেই সুখবর দিয়েছেন ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিক’। সোমবার ম্যাচের শেষেও সুনীলের মুখে ছিল হাজার ওয়াটের হাসি। ম্যাচ জয়ের পাশাপাশি বাবা হতে চলা সুনীলকে শুভেচ্ছা জানান সঞ্চালকও।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে, দীর্ঘদিনের প্রেমিকা তথা কিংবদন্তি ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্যের মেয়ে সোনমের সঙ্গে চারহাত এক হয় ভারতীয় স্ট্রাইকারের। তার পর থেকে জীবনের নানা চড়াই-উতরাইয়ে পরস্পরের পাশে দাঁড়িয়েছেন তাঁরা। এবার তাঁদের সংসারে আসতে চলেছে নতুন সদস্য। সোমবার ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ ফুটবলে ভানুয়াটুকে ১-০ গোলে হারিয়ে টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা নিশ্চিত করে ভারত। এক ম্যাচ বাকি থাকতেই ভারতীয় দলকে খেতাবি লড়াইয়ের টিকিট এনে দেন ক্যাপ্টেন সুনীল ছেত্রী। দ্বিতীয়ার্ধে দলের হয়ে জয়সূচক গোলটি করেন তিনি নিজেই।
ম্যাচের প্রথমার্ধ গোলশূন্য থাকে। দ্বিতীয়ার্ধেও ৩৫ মিনিটের খেলা অতিক্রান্ত হয় গোলশূন্যভাবেই। গোলের জন্যে অপেক্ষা করতে হয় ৮০ মিনিট পর্যন্ত। ৮১ মিনিটের মাথায় গোল করে সমর্থকদের দুশ্চিন্তা দূর করেন ভারতীয় ফুটবল অধিনায়ক। গোল করেই বলটিকে জার্সির ভেতরে পুরে দর্শকাসনের একটি বিশেষ অংশের দিকে ছুটে যান সুনীল। দেখা যায়, সে দিকেই বসে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী সোনম ভট্টাচার্য। এরপরই স্ত্রীর উদ্দেশ্যে ভালোবাসায় মোড়া উড়ন্ত চুম্বন ছুঁড়ে দেন ‘ক্যাপ্টেন ফ্যান্টাসটিক’।
সোমবারের ম্যাচে ছেত্রীর জয়সূচক গোলটি ছিল আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁর ৮৬তম গোল। সব থেকে বেশি আন্তর্জাতিক গোল করা ফুটবলারের তালিকায় এই মুহূর্তে ৫ নম্বরে নাম রয়েছে সুনীল ছেত্রীর। আন্তর্জাতিক ফুটবলে-
১. ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (পর্তুগাল): ১২২টি গোল
২. আলি দাই (ইরান): ১০৯টি গোল
৩. লিওনেল মেসি (আর্জেন্তিনা): ১০২টি গোল
৪. মোখতার দাহারি (মালয়েশিয়া): ৮৯টি গোল
৫. সুনীল ছেত্রী (ভারত): ৮৬টি গোল
সুনীলের গোল যেমন সমস্ত সমর্থকদের আনন্দিত করেছেন, তেমনই ছেত্রীর সেলিব্রেশন সকলকে আনন্দিত করেছে। যদিও ফুটবল মাঠে এ হেন উচ্ছ্বাস প্রকাশ নতুন ঘটনা নয়। ১৯৯৪ বিশ্বকাপে কর্নার স্টিকের সামনে রোমারিও-বেবেতোর বাচ্চা দোলানোর শ্যাডো ফুটবল ইতিহাসে আজও মাইলফলক হয়ে রয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ দেশেই ইস্টবেঙ্গলের জার্সি গায়ে একই ধরনের উচ্ছ্বাস দেখিয়েছিলেন মাইক ওকোরো। এবার সেই তালিকায় নাম জুড়ল সুনীল ছেত্রীর।