কোয়ারেন্টিন সেন্টারে চরম অব্যবস্থা, বিতর্ক বাড়াল সূর্যকান্তের ভাইরাল ভিডিও

আক্রান্তদের মধ্যে ছিলেন এক আশা কর্মী। তিনি জানিয়েছেন, এর থেকে বাড়িতে থাকলে ভাল হত। কমপক্ষে খাবার জল তো পাওয়া যেত। যে অ্যাকোয়াগার্ড রয়েছে, তাতে মশা পড়ে থাকতে  দেখা গিয়েছে।

6574b98b6036304cfc6a0f156e9d71f7

 

জলপাইগুড়ি: দেশের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাজ্যে করোনা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিন হু হু করে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে জলপাইগুড়ি জেলার একটি কোয়ারেন্টিন সেন্টারের ছবি ধরা পড়েছে। কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের চরম দুর্দশার কথা ভিডিওতে তুলে ধরেছেন এক ব্যক্তি। ভিডিওটি প্রকাশ পাওয়ার পরেই ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।  ভাইরাল ভিডিওকে ঢাল করে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলছেন সূর্যকান্ত মিশ্র৷ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশান৷

আরও পড়ুন: ভারতে কবে পাওয়া যাবে অক্সফোর্ডের প্রতিষেধক, কত দাম জেনে নিন

সূর্যকান্ত মিশ্রর শেয়ার করা ভিডিওটি জলপাইগুড়ি জেলার একটি কোয়ারেন্টিন সেন্টার বলে দাবি করা হয়েছে৷ সেখানে করোনা আক্রান্ত রোগীরা নানান অভিযোগ তুলছেন ভিডিওটিতে৷ অভিযোগ, সেখানে রোগীদের পানীয় জলের মতো ন্যূনতম সুবিধাও দেওয়া হয়নি৷ অক্সিজেন তো দূর অস্ত, আক্রান্ত রোগীদের জন্য কোনও চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই বলেও দাবি করা হয়েছে ওই ভিডিওটিতে৷ দেখা যাচ্ছে না কোনও চিকিৎসকেরও৷  নেই কোনও নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী। ইতিমধ্যে বেশ কিছু করোনা আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট দেখা দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে সেখানে৷ অক্সিজেনের ব্যবস্থা না থাকার জন্য তাঁরা বিপদে পড়েছেন বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে৷ এছাড়াও ওই সেন্টারের অনেক আক্রান্ত জানিয়েছেন, প্রচণ্ড গলাব্যথা থাকা সত্ত্বেও গার্গল করার নূন্যতম সুবিধা পর্যন্ত নেই, কাশির সিরাপ বার বার চাওয়ার পরেও পাওয়া যাচ্ছে না বলেও ওই ভিডিওটিতে অভিযোগ তোলা হয়েছে৷

আরও পড়ুন: দ্বিগুণ সুরক্ষা দেবে অক্সফোর্ডের করোনা-টিকা, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের বড় সাফল্য

ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে ছিলেন এক আশা কর্মী। তিনি জানিয়েছেন, এর থেকে বাড়িতে থাকলে ভাল হত। কমপক্ষে খাবার জল তো পাওয়া যেত। যে অ্যাকোয়াগার্ড রয়েছে, তাতে মশা পড়ে থাকতে  দেখা গিয়েছে। সেই জল করোনা আক্রান্ত রোগীদের খেতে হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতিদিন প্রাতঃরাশে পুরি-সবজি দেওয়া হচ্ছে। যে পুরি খেয়ে অনেকের নতুন করে গ্যাসের প্রবলেম দেখা দিয়েছে। আক্রান্তদের দাবি, এই সময় ভালো ভালো খাবার খেতে হয় যাতে ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ে। তার জায়গায় যে সব খাওয়ার দেওযা হচ্ছে, তাতে রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়বে।

ভিডিও পোস্ট করে রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র ফেসবুকে লিখেছেন, (অপরিবর্তিত) ‘‘জলপাইগুড়ি কোয়ারাইন্টাইন সেন্টার। হাসপাতালে কোভিড-১৯ চিকিৎসার ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত। বিশেষ করে গুরুতর অসুস্থ রোগীদের চিকিৎসা জন্য প্রয়োজনীয় সাজ সরঞ্জামের অভাবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অবস্থা অনেকটাই 'ঢাল নেই, তলোয়ার নেই নিধিরাম সর্দার'-এর মতো। অবিরাম বৃষ্টি এবং কোথাও কোথাও বন্যাপরিস্থিতি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোর করোনা মোকাবেলার সঙ্কটকে আরো গভীর করে তুলেছে। সরকারকে বারবার বলেও কিছু সুরাহা হয়নি। আজ জলপাইগুড়ি শহরের শুভ্র সাহা 51 বছর বয়স ,42 বছর বয়স মনোজ নন্দী একটু আগে মারা গেলেন, করোনা সংক্রমণে। শুভ্র সাহার বাবা জলপাইগুড়ির প্রখ্যাত চিকিৎসক ছিলেন ডাঃ বি কে সাহা। এখানকার চিকিৎসক,নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীরাও অসহায় বোধ করছেন। পরিস্থিতির অবনতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং সরকার দায়িত্ব এড়াতে পারবেন না।’’ 

রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সূর্যকান্ত মিশ্র ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হতেই ছড়িয়ে পড়ে বিতর্ক৷ গোটা ঘটনা ফাঁস হতেই কোয়ারেন্টিন সেন্টারের কারা, কীভাবে মোবাইল ফোন নিয়ে ঢুকল, তা দেখা হবে বলে জানিয়েছেন ওএসডি জলপাইগুড়ি শান্ত রায়৷ জানিয়েছেন, ‘‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘটনা৷ সূর্যকান্ত মিশ্র একজন চিকিৎসক৷ তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীও ছিলেন৷ আমি তাঁকে অনুরোধ করবো, তিনি নিজে এসে একবার দেখে যান৷ যাচাই করার পর ফেসবুকে দিন৷’’ এই বিষয়ে গৌতম দেব জানিয়েছেন, ‘‘সূর্যকান্ত মিশ্রকে আমি বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, সারা বিশ্ব করোনা বিরুদ্ধে লড়ছে৷ এই আপৎকালীন পরিস্থিতির মধ্যে আমাদের করোনার মোকাবেলা করতে হচ্ছে৷ সেখানে সারা রাজ্যে একটা-দুটি জায়গাতে কিছু অভিযোগ আসতে পারে৷ আমরা বিষয়টি চিহ্নিত করেছে৷’’ যদিও ভাইরাল ভিডিও ফুটেজের সত্যতা যাচাই করেনি আজ বিকেল ডট কম৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *