করাচি: জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্তকে কেন্দ্র করে ভারত-পাক দ্বন্দ্ব প্রায়ই তৈরি হয় রক্তাক্ত পরিস্থিতি৷ প্রায় দু-বছর আগে কাশ্মীরের পুলওয়ামায় পাক হানার পাল্টা হিসেবে পাকিস্তানের বালাকোট এলাকায় এয়ার স্ট্রাইক চালিয়েছিল ভারতীয় বায়ুসেনা। কিন্তু পাকিস্তানের তরফ থেকে ভারতের এই আক্রমণে বিশেষ ক্ষয়ক্ষতির দাবি উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল একেবারেই। এবার সেই বিষয়ে প্রাক্তন পাক কূটনীতিবিদের মন্তব্যে ফের মুখ পুড়ল পাকিস্তানের।
২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযানে পাকিস্তানের প্রায় ৩০০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছিল, এমনটাই স্বীকার করলেন পাকিস্তানের প্রাক্তন কূটনীতিবিদ আঘা হিলালি। সূত্রের খবর, দেশের একটি জনপ্রিয় বৈদ্যুতিন উর্দু সংবাদমাধ্যমের কাছে সাক্ষাৎকারে এই মন্তব্য করেছেন তিনি। প্রায় দু-বছর আগের সেই দিনের কথা স্মরণ করে তিনি বলেছেন, ‘‘আন্তর্জাতিক সীমান্ত পার করেছিল ভারত এবং যুদ্ধের মতো কাজ করেছিল। তাতে কমপক্ষে ৩০০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছিল। ওদের থেকে আমাদের লক্ষ্য ভিন্ন ছিল। আমরা ওদের হাইকমান্ডদের নিশানা করেছিলাম। ওটাই আমাদের সত্যিকারের নিশানা ছিল, কারণ ওঁরা সামরিক বাহিনীর সদস্য ছিলেন।’’
এখানেই শেষ নয়, আঘা হিলালি আরো বলেন, ‘‘আমরা অবচেতনভাবে স্বীকার করে নিয়েছিলাম যে ভারতের এই সার্জিকাল স্ট্রাইকের ফলে কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। অবচেতনভাবেই আমরা ওদের বলেছিলাম যে ওরা যা করবে, আমরা সেইটুকুই করব এবং তার বেশি যাব না।’’ প্রাক্তন কূটনীতিবিদের এহেন মন্তব্যে স্বভাবতই অস্বস্তিতে পড়েছে পাকিস্তানের ইমরান খান সরকার। বালাকোটে খাইবার-পাখতুনখাওয়া অঞ্চলে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইক সম্বন্ধে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলেন সেখানে কোনো হতাহতের খবর মেলেনি। ভারতের আক্রমণে খুবই সামান্য কিছু ক্ষতি হয়েছে, এমনটাই দাবি ছিল তাঁর। তিনি এবং তাঁর সরকার জানিয়েছিলেন বালাকোটের যে অঞ্চলে ভারতের মূল আঘাত হয়েছিল, সেই স্থান আদতে ছিল একেবারেই ফাঁকা। তবে আঘা হিলালির মন্তব্য সামনে আসার পর থেকে পাকিস্তানের সেই দাবি নতুন করে প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
পাকিস্তানের সামান্য ক্ষয়ক্ষতির দাবি অবশ্য প্রথম থেকেই উড়িয়ে দিয়েছিল দিল্লি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জানিয়েছিলেন, এই আক্রমণে পাকিস্তানের বহু জঙ্গি মারা গেছেন। উল্লেখ্য, সার্জিক্যাল স্ট্রাইক পরবর্তীতে এর আগেও একাধিক বার বিতর্কের মুখে পড়েছে পাক দাবি। গত অক্টোবরেই পাকিস্তানের বিরোধী দল পিএমএল-এনের সাংসদ আয়াজ সাদিক দাবি করেছিলেন, পুলওয়ামা হামলার ঘটনায় পাকিস্তানের নেতারা আতঙ্কে পড়েছিলেন।