ওয়াশিংটন: সত্যই কি আছে ভিনগ্রহী? অতিমানব জীব নিয়ে পৃথিবীবাসীর মনে আগ্রহের অন্ত নেই। এই নিয়ে আমাদের বাস্তবিক জ্ঞানের চেয়ে জল্পনা-কল্পনাই বেশি। মাঝে মধ্যেই আকাশে ইউএফও বা উড়ন্ত চাকতি দেখার কথা দাবি করে থাকেন অনেকে। বহুবার বহু রহস্যময় ছবিও আমাদের সামনে এসেছে। তবে এবার ভিনগ্রহী বা অ্যালিয়েনদের নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে বোমা ফাটালেন সে দেশের এক প্রাক্তন গুপ্তচর৷
মার্কিন কংগ্রেসে শুনানি চলার সময় প্রাক্তন মার্কিন গুপ্তচর ডেভিড গ্রুশ ভিনগ্রহীদের নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেন। তাঁর দাবি, অ্যালিয়েন আছে। শুধু তাই নয়, শপথ নিয়ে জোর গলায় ডেভিড বলেন, ভিনগ্রহীদের দেহ রয়েছে আমেরিকার সরকারের হেফাজতে। ভিনগ্রহী সম্পর্কে তাঁর বহু সহকর্মীও অবগত বলে জানান এই প্রাক্তন গুপ্তচর।
‘হুইশেলব্লোয়ার’ ডেভিড গ্রুশের দাবি, মার্কিন মুলুকেই একটি ইউএফও ক্র্যাশ করেছিল। সেই ধ্বংসাবশেষ থেকে পাইলটের দেহ উদ্ধার করে আনা হয়৷ তবে সেই দেহ কোনও মানুষের ছিল না। ভিনগ্রহীদের কর্মকাণ্ডের জেরে তাঁর বেশকিছু সহকর্মী সেই সময় আহত হয়েছিলেন বলেও দাবি জানান ডেভিড গ্রুশ। তাঁর কথায়, ‘‘আমার কার্যকালে আমি একাধিক ইউএফও ক্র্যাশের কথা শুনেছি। সেই সব ধ্বংসাবশেষ সংগ্রহও করে রাখা হয়েছে। সেগুলি দেখে রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চেষ্টাও হয়েছে।’’
তবে ইউএফও এবং ভিগ্রহীদের নিয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেননি ডেভিড গ্রুশ। তবে তিনি যতটুকু বলেছেন, তাতেই সকলের চক্ষু চড়কগাছ। কংগ্রেশনাল শুনানির মাঝে প্রাক্তন এই মার্কিন গুপ্তচর আরও বলেন, ‘‘আমি এই বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তাদের সঙ্গে আগেও কথা বলেছি। তবে এবার আমি হুইসেলব্লোয়ার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি অনেক তথ্য সংগ্রহ করেছি। তবে সব তথ্য বিস্তারিত ভাবে জনসমক্ষে তুলে ধরা সম্ভব নয়। কারণ এর অনেকটাই ক্লাসিফায়েড।’’
বোমা ফাটিয়ে ডেভিড আরও বলেন, শুধুমাত্র সাধারণ মানুষ নয়, কংগ্রেসের কাছেও ইউএফও এবং অ্যালিয়েনের অস্তিত্বের কথা লুকিয়ে গিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। তাঁর দাবি, ভিনগ্রহের যান চাক্ষুস করেছেন, এমন বহু মানুষের সঙ্গে তিনি নিজে কথা বলেছেন। তাঁরা সকলেই প্রতিরক্ষা খাতের সঙ্গে জড়িত। তাঁর কাছে এই সংক্রান্ত ছবি, সরকারি নথি আছে বলেও দাবি তাঁরা৷
ভিন্গ্রহীযানকে আগে আনআইডেন্টিফায়েড ফ্লাইং অবজেক্ট বলে গন্য করা হতো, এখন তা আনআইডেন্টিফায়েড এরিয়াল ফিনোমেনন নামে পরিচিত। ডেভিডের বক্তব্য, ‘‘বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে আমরা মোটেই একা নই। কর্তব্যরত অবস্থায় আমাকে বলা হয়েছিল, কয়েক দশক আগে ভেঙে পড়া ভিন্গ্রহীযানের ধ্বংসাবশেষ, তার থেকে উদ্ধার হওয়া চালকের দেহাংশ নিয়ে গবেষণা এবং সেটিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি থেকে তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে।’’
সব জেনেও জনসমক্ষে কেন মুখ খোলেননি তিনি? প্রশ্নের জবাবে ডেভিড বলেন, সরকার বিষয়টি গোপন রেখেছে। সেই সংক্রান্ত সমস্ত নথিও গোপন রাখা হয়েছে। তাই জনসমক্ষে বিষয়টি নিয়ে মুখ খোলার সাহস দেখাতে পারেননি তিনি। আমেরিকার কংগ্রেসের প্রতিনিধি টিম বারশেটও এ ব্যাপারে ডেভিডকে সমর্থন করেন। তিনি জানান, “সরকার স্বচ্ছতা বজায় রাখবে, আমরা সকলেই সেটা আশা করি। কিন্তু যে সরকার দেশের মানুষকেই বিশ্বাস করে না, তাদের আমরা বিশ্বাস করি কী করে? দুই নৌ-আধিকারিকের সঙ্গেও আমার কথা হয়েছে৷ তাঁরাও ভিন্গ্রহীযান দেখেছেন বলে জানিয়েছেন।”
গ্রুশ জানান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এলিয়েনদের যুদ্ধজাহাজ রয়েছে। তিনি বারবার কংগ্রেসকে সেই ব্যাপারে তথ্যও সরবরাহ করেছেন। তবে এর জন্য তাঁকে সরকারি আধিকারিকদের রোষের মুখে পড়তে হয়েছে বলেই দাবি।