ব্যাটে ধুলো জমলেও ১১-র ওই বাউন্ডারি বন্দি থাকবে ফ্রিজ ফ্রেমে

১৫ আগস্ট ছোট একটা ইনস্টাগ্রাম পোস্ট, “৭.২৯ মিনিট থেকে আমাকে অবসৃত মনে করতে পারেন। এতদিন ধরে ভালবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।” ব্যাস? আর কিচ্ছু নয়? মাহি আপনি নিজেকে কি মনে করেন? এভাবে কষ্ট নাও তো দিতে পারতেন! মানলাম, আপনি সর্বদা অবিচল। প্রতিটা হেরে যাওয়া ম্যাচকে আপনি অবিচল থেকে জিতিয়ে গেছেন। কিন্তু শেষ সময়ে এরকম অবিচল থেকে আমাদের কেন হারিয়ে দিলেন?

 

সিদ্ধার্থ বোস: মন ভারাক্রান্ত। নীল জার্সিতে আর দেখা যাবে না মাহিকে। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে ভারতের ৭ নম্বর নীল জার্সিতে দেখতে পাওয়া নামটা আজ অতীত। সচিন তেন্ডুলকারের ১০ নম্বর জার্সির মতো ৭ নম্বর জার্সিকেও অবসর দেওয়া হোক, এমনটাই দাবি ধোনি ভক্তদের। বিশ্ব জুড়ে চরম দুঃখের সময়ে এই বার্তি দুঃখ না দিলে পারতেন এমএস। হলুদ জার্সিতে চেন্নাইয়ে হলেও নীল জার্সিতে দেশের মুখ, দেশের গর্ব মহেন্দ্র সিং ধোনি।

১৫ আগস্ট ছোট একটা ইনস্টাগ্রাম পোস্ট, “৭.২৯ মিনিট থেকে আমাকে অবসৃত মনে করতে পারেন। এতদিন ধরে ভালবাসা ও সমর্থনের জন্য ধন্যবাদ।” ব্যাস? আর কিচ্ছু নয়? মাহি আপনি নিজেকে কি মনে করেন? এভাবে কষ্ট নাও তো দিতে পারতেন! মানলাম, আপনি সর্বদা অবিচল। প্রতিটা হেরে যাওয়া ম্যাচকে আপনি অবিচল থেকে জিতিয়ে গেছেন। কিন্তু শেষ সময়ে এরকম অবিচল থেকে আমাদের কেন হারিয়ে দিলেন? হাজার হাজার ধোনি ফলোয়াররা এই অবসর মেনে নিতে পারেনি। তাই তারা সচিনের মতোই ধোনিকেও শ্রদ্ধা জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে ৭ নম্বর জার্সিকে অবসর দিতে আবেদন জানিয়েছে বিসিসিআইকে। অন্যদিকে, ধোনির বন্ধু গৌতম গম্ভীর জানিয়েছেন, রহিত শর্মা'র ২৬৪ রানের ইতিহাসও হয়ত একদিন নতুন কেউ ভেঙে দেবেন কিন্তু মাহির মতো আইসিসির তিনটি ট্রফি জেতার খেতাব কেউ নিতে পারবেন না।

মহেন্দ্র সিং ধোনি

২০০৭ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত দেশের হয়ে ৩৩২টি ম্যাচে ধোনি অধিনায়ক ছিলেন। তিন ফর্ম্যাট মিলিয়ে সবথেকে বেশি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহি। এর মধ্যে ১৭৮টি ম্যাচ ভারত জিতেছে, ১২০টি ম্যাচে হার এবং ৬টি ম্যাচে টাই ও ১৫টি ড্র হয়েছে। মাহির কীর্তি নিয়ে আলোচনা করার কোনও মানে হয় না, কেননা গোটা ভারতবাসী মাহিকে চেনে। হঠাৎ করেই অধিনায়কত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন, এবার হঠাৎ করেই মাঠ ছেড়ে দিলেন। প্রশ্ন করাই যায়, এ অধিকার আপনাকে কে দিয়েছে মাহি! হাজার ফ্যানের বেদনার দায়িত্ব আপনি নেবেন না, কারণ আপনি তো 'কুলম্যান'।

মনে হয় সেমিফাইনালের ওই রান আউট টা আজও আপনাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। না হলে এতদিন অপেক্ষা করেও শেষে এই হঠাৎ সরে যাওয়া কেন! সবসময়েই আপনি অনন্য, এক্ষেত্রেও তার ব্যাতিক্রম হলেন না। ভারতবাসী ভেবেছিল ২০২০ টি২০ আপনার শেষ লক্ষ্য, কিন্তু মহামারী তা আটকে দিল। আরও একবার তো মহেন্দ্র সিং ধোনিকে দেখাই যেত, কিন্তু শেষে এসে এভাবে তাড়াহুড়ো করে দিলেন? ভীষণ রাগ হচ্ছে, খুব কষ্ট হচ্ছে। মানতে মন চাইছে না। কিন্তু এটাই যে সত্যি! আপনার সিদ্ধান্তরা সবসময়েই প্রাধান্য পেয়েছে, তাই এই সিদ্ধান্তও ব্যাতিক্রম হবে না। মাহি আপনি সেরা ছিলেন, সেরাই থাকবেন। আপনার ব্যাটে হাজার ধুলো জমলেও এগারোর ওই স্তব্ধ করা বাউন্ডারি ফ্রিজ ফ্রেমে বন্দি থেকে যাবে আজীবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty − 17 =