কলকাতা: শিক্ষাক্ষত্রে নিয়োগ মামলায় ফের আদালতে ধাক্কা স্কুল সার্ভিস কমিশনের৷ ভুল প্রশ্ন এবং সঠিক মূল্যায়ন না করায় ১২ বছর পরেও চাকরি থেকে বঞ্চিত একাধিক প্রার্থী। এ নিয়ে বহুবার আবেদন-নিবেদন করেছেন বঞ্চিতরা৷ কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাতকরেননি বলেই অভিযোগ। বুধবার ছিল এই মামলার শুনানি৷ বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চে তীব্র ভর্ৎসনার মুখে পড়েন এসএসসি-র কর্তারা। আগামী ২৮শে জুলাইয়ের মধ্যে এবিষয়ে এসএসসিকে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে রিপোর্ট দিতে হবে বলে নির্দেশ আদালতের৷
২০১১ সালে রিজিওনাল লেভেল সিলেকশন টেস্টের (আরএলএসটি) পরীক্ষা নেওয়া হয়েছিল। ৯০ নম্বরের ওই পরীক্ষায় ৬জন প্রার্থীকে নট কোয়ালিফাই করে এসএসসি। তথ্যের অধিকার আইনে (আরটিআই) অকৃতকার্যরা এসএসসির কাছে তাঁদের নম্বর জানানোর আবেদন জানায়। এসএসসির তরফে জানানো হয়, ওই প্রার্থীরা মূল পর্বে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় নম্বর পাননি। কিন্তু রেজাল্ট হাতে পাওয়ার পর প্রার্থীরা দেখেন, এসএসসি ১২টি প্রশ্নের সঠিক মূল্যায়নই করেনি। তার মধ্যে ৬টি চাইল্ড ডেভলপমেন্ট সংক্রান্ত, দুটি ইংরেজি এবং বাংলায় লেখা প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া সত্ত্বেও তাঁদের নম্বর দেওয়া হয়নি। এবিষয়ে এসএসসির কাছে বহুবার আবেদন জানানো সত্ত্বেও কোনও লাভ হয়নি৷ অগত্যা তাঁরা কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন৷
তপন কুমার পাল, হর সুন্দর পান্ডা, শুভ্রাংশু চক্রবর্তী সহ অন্যান্য সকল মামলাকারী পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী আদালতে জানান, মোট ১২টি প্রশ্নের ভুল মূল্যায়ন করা হয়েছিল। বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার এজলাসে সেই ভুল স্বীকার করে ২০২৩-এর ৬ই জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এসএসসি ৷ মামলাকারিদের যোগ্য বলে উল্লেখ করে নিয়োগের ব্যবস্থাও করে।
আইনজীবী আরও বলেন ঠিক একই কারণে এই চাকরি প্রার্থীদেরও বঞ্চিত করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁর দাবি, এসএসসি যে প্রশ্নপত্র তৈরি করেছে সেখানে কয়েকটি প্রশ্ন সিলেবাসের বাইরে থেকে এসেছে এবং মামলাকারীরা মোট ১২টি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলেও তাঁদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। এবিষয়ে বারংবার এসএসসি’র দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করা হলেও, কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। সেই কারণেই এক দশকের বেশি সময় ধরে তাঁরা বঞ্চিত থেকেছে। বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার নির্দেশে এসএসসি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ দিয়েছে। তাহলে এই মামলাকারিরা সেই সুযোগ পাবে না কেন? প্রশ্ন তোলেন তিনি৷ এর পরই ২৮ জুলাইয়ের মধ্যে এসএসসি-কে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করতে বলেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ রায়৷