‘সমকাজে সমবেতন’, হাইকোর্টে বড় জয় শিক্ষকদের! বকেয়া পাওনা মেটাতে নির্দেশ

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের দুই জন আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন স্থায়ী শিক্ষকদের সমান করে দেওয়া হল। বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত স্থায়ী শিক্ষকদের পাশাপাশি বর্ধমানের আংশিক শিক্ষকদেরও 'বেসিক পে' দিতে হবে রাজ্যকে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তে জোর ধাক্কা খেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

 

কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের দুই জন আংশিক সময়ের শিক্ষকদের বেতন স্থায়ী শিক্ষকদের সমান করে দেওয়া হল৷ বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়েছে, ২০১০ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত স্থায়ী শিক্ষকদের পাশাপাশি বর্ধমানের আংশিক শিক্ষকদেরও ‘বেসিক পে’ দিতে হবে রাজ্যকে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তে জোর ধাক্কা খেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।

বেশ কয়েকদিন ধরে হাইকোর্টে ‘সমান কাজের জন্য সমান বেতনে’র দাবিতে একটি মামলা চলছিল। এই মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। বর্ধমান জেলার খানদ্রা হাইস্কুলের আংশিক সময়ের শিক্ষক অনির্বাণ ঘোষের আইনজীবী লক্ষ্মীকুমার গুপ্ত ও বিটরা হাইস্কুলের আংশিক সময়ের শিক্ষক বরুণকুমার ঘোষের আইনজীবী সৌমেনকুমার দত্ত ও সৌরভ দত্ত জানিয়েছেন, ২০১৯ সালে সমকাজে সমবেতনের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি মৌসুমী ভট্টাচার্য। এরপর এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার হাইকোর্টের কাছে পুনর্বিবেচনার আর্জি করেছিল। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী রাজ্যের এই মামলায় পরাজয় হল, তা বলাই বাহুল্য।

৩ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের তরফে বলা হয়, রাজ্য কিংবা রাষ্ট্র তখনই উন্নতি করে যখন সেখানের নাগরিকরা শিক্ষিত হতে পারেন। যে সমাজে শিক্ষকদের মর্যাদা থাকে না, সেই সমাজ কিংবা রাষ্ট্র অসাম্যের শিকার হয়ে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ে। আর রাষ্ট্রে অসাম্যের সৃষ্টি হলে তা আত্মহননের সমান। আংশিক সময়ের শিক্ষক কিংবা স্থায়ী শিক্ষক, উভয় পক্ষেরই আসল পরিচয় তাঁরা 'শিক্ষক'। আংশিক শিক্ষকদেরও স্থায়ী শিক্ষকদের মতোই সমান ভাবে কাজ করে যেতে হয়। তাই স্থায়ী শিক্ষকদের সমান অর্থ তাঁদেরও পাওয়ার কথা। এরপরেই বিচারপতিরা জানান, নির্দেশের চার সপ্তাহের মধ্যেই আংশিক শিক্ষকদের বকেয়া পাওনা রাজ্যকে দিতে হবে।

অন্যদিকে, রাজ্যের তরফে আইনজীবী কিশোর দত্ত বলেছিলেন, বর্ধমানের ওই দুই শিক্ষক স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচিত হননি। সেক্ষেত্রে তাঁরা সমবেতনের দাবি করতে পারেন না। ডিভিশন বেঞ্চ এই আবেদন না মেনে সাফ জানায়, ওই দুজন শিক্ষককে স্থায়ী শিক্ষকদের মতো আরও বেশ কিছু সুযোগ সুবিধা দিতে হবে রাজ্যকে। পাশাপাশি ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে, ২০০৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০০৯-এর ডিসেম্বর এবং ২০১৩ সালের ডিসেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত কেন সমান মূল বেতন দেওয়া হবে না, সেই ব্যাপারে আংশিক সময়ের ওই দুই শিক্ষক তাঁদের ১৭ বছরের কাজ করার সমস্ত নথিপত্র-সহ আবেদন জানাতে পারবেন সংশ্লিষ্ট দফতরের সচিবের কাছে ই-মেল মারফত। চুক্তিতে নিয়োগের যুক্তি দেখিয়ে স্কুলশিক্ষা সচিব তাঁদের আবেদন অগ্রাহ্য করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়েছে হাইকোর্ট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 + 3 =