শেষ ৪ মাসে দেশে কর্মহীন ২.৩০ কোটি বেতনভুক কর্মী, বলছে সিএমআইই

কয়েকদিন আগেই কংগ্রেসের তরফে রাহুল গাঁধী মোদী সরকারকে বেকারত্ব নিয়ে বিঁধেছেন, তাঁর তত্ত্ব যে ভুল নয় একথা প্রমাণ করে দিল সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বা সিএমআইই এর এক রিপোর্ট। রিপোর্টে দেখা গেছে, এপ্রিল মাস থেকে প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন।করোনা মহামারীর আগে থেকেই দেশে বেকারত্ব সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।

 

নয়াদিল্লি: কয়েকদিন আগেই কংগ্রেসের তরফে রাহুল গান্ধী, মোদী সরকারকে বেকারত্ব নিয়ে বিঁধেছেন৷ তাঁর সেই অভিযোগ যে ভুল নয় একথা প্রমাণ করে দিল সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি বা সিএমআইইয়ের রিপোর্ট৷ রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, এপ্রিল মাস থেকে প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ কাজ হারিয়েছেন৷ জুলাই মাসে নতুন করে ৫০ লক্ষ কর্মী কাজ হারিয়েছেন৷

করোনা মহামারীর আগে থেকেই দেশে বেকারত্ব সমস্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল৷ রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, ১৪ কোটি মানুষ বেকার হয়েছেন৷ সিএমআইইয়ের রিপোর্টে এই তত্ত্ব সঠিক বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে৷ রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, জুলাই মাসে নতুন করে ৫০ লক্ষ কর্মী কাজ হারিয়েছেন৷ দেশে মোট কর্মসংস্থানের মধ্যে বেতন ভুক্ত কর্মসংস্থানের সংখ্যা মাত্র ২১ শতাংশ, যা অসংগঠিত ক্ষেত্রে নিযুক্তদের তুলনায় স্বাভাবিকভাবেই খুবই কম৷

রিপোর্টে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল ও অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজের সুযোগ বাড়লেও বেতন ভুক্ত কর্মীদের অবস্থা শোচনীয়৷ এদিকে দেশের জিডিপি বা আর্থিক বৃদ্ধির হার তেমন ভাবে অসংগঠিত কর্মসংস্থানের ওপর নির্ভর করে না৷ তার অনেকটাই আসে বেতন ভুক্ত কর্মসংস্থানের ওপর ভিত্তি করে৷ তাই অসংগঠিত ক্ষেত্রে কাজ হারানো বা কাজ পাওয়া দেশের আর্থিক বৃদ্ধির কাঁটাকে তেমনভাবে প্রভাবিত করতে পারেনি৷ মহামারী ঘোষণার পর থেকেই এপ্রিলে বেকারত্বের সংখ্যা বাড়তে থাকে। সেক্ষেত্রে প্রথমেই ১৭.৭ মিলিয়ন মানুষ বেকার হয়ে পড়েন। জুন মাসে এই পরিস্থিতির কিছুটা স্বাভাবিকরণ ঘটলেও জুলাই মাসে ফের বেকারত্বের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে শুরু করে৷ জুন মাসে ৩.৯ মিলিয়ন মানুষের কাজের সুযোগ হয়৷ কিন্তু জুলাই মাসে আবারও প্রায় ৫০ লক্ষ বেতন ভুক্ত মানুষ নতুন করে বেকারত্বের শিকার হন৷

এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বিএমএল মঞ্জুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা অনুশ্রী পল বলেছেন, ‘‘লকডাউনের পর থেকেই দেশের বেকারত্বের হার বেড়েছে৷ শহর ও গ্রামের মধ্যে কাজের সুযোগের ক্ষেত্রে ব্যবধান সৃষ্টি হয়েছে৷ এর ফলে বেতন ভুক্ত কর্মচারীরা সব থেকে বেশি সমস্যার মধ্যে পড়েছেন৷ আনলক পর্ব শুরু হলেও কর্মসংস্থানের গতি খুবই ধীর গতিতে চলছে৷ মাঝখানে কেন্দ্র সরকার ইনসেনটিভ ঘোষণা করায় পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও আমূল পরিবর্তন ঘটেনি৷’’ 

বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতির ফলে শহরে মানুষের চাহিদার গ্রাফ ক্রমশ নিম্নমুখী৷ আগে যে পরিমাণ দ্রব্যের চাহিদা ছিল করোনা আবহে তা অনেকটাই কমেছে৷ ফলে সিএমআইই সমীক্ষায় জানিয়েছে, চাহিদা নিম্নমুখী থাকায় এখনই পরিস্থিতির দ্রুত বদল সম্ভব হবে না৷ দেশের অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানো নিয়ে সিএমআইইয়ের তরফে সংশয় প্রকাশ করা হয়েছে৷ বিশেষজ্ঞদের মতে, বেতনভুক কর্মসংস্থানের বাজার গড়ে না উঠলে দেশের অর্থনীতির হাল ফেরানো সম্ভব হবে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

six + 1 =