el nino
কলকাতা: চলতি বছর দাপট দেখিয়েছে গরম৷ তীব্র দাবদাহ থেকে ভ্যাপসা গরম, ঘেমে নেয়ে অস্থির হয়েছে মানুষ৷ কখনও আবার রোদের ছ্যাঁকায় ঝলসে গিয়েছে ত্বক৷ যদিও সে সব পর্ব কাটিয়ে একটু শিতল হাওয়ায় গা-শিরশির ভাব, শীত আসার আগের মিষ্টি আমেজে মজে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। আগামী মাসগুলিতে শীত উপভোগ করবে বলে আশায় বুক বেঁধেছেন অনেকেই। নলেন গুড়ের স্বাদে এবার শীত কাটানোর পালা৷ তবে দাঁড়ান৷ এতটাও আশা ঠিক নয়৷ কারণ, শীত আসার আগেই আশঙ্কার কথা শোনালেন আবহবিদরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ২০২৩-এর শীত এ যাবৎ কালের উষ্ণতম শীত হতে চলেছে৷ এই আশঙ্কা সত্য হওয়ার সম্ভবনা প্রায় ৯৫ শতাংশ৷ এমনটাই মনে করছেন ন্যাশনাল ওশানিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফেরিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এনওএএ) বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, ভূপৃষ্ঠ ও সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেকটাই বেশি থাকা এবং প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ স্রোত বা এল নিনোর প্রভাবে এ বার উত্তর গোলার্ধে শীতের আমেজ মাটি হতে পারে৷
এনওএএ-র ন্যাশনাল সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল ইনফর্মেশনের বিভাগীয় প্রধান কারিন গ্লিসন সতর্ক করে বলেছেন, ‘এল নিনো এখনও পর্যন্ত শক্তি সঞ্চয় করে চলেছে। কতদিন এভাবে চলবে, সেটা এখনও বলা যাচ্ছে না’, তাঁর কথায়, ‘১৯৯১ থেকে ২০২০-এই ৩০ বছরকে বেস পিরিয়ড হিসেবে ধরলে দেখা যাবে, ২০২৩-এর জানুয়ারি থেকে অগাস্ট, এই ৮ মাসে উত্তর গোলার্ধের গড় তাপমাত্রা বেস পিরিয়ডের চেয়ে ১.০৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি ছিল। রেকর্ড বলছে, এই ৮ মাস ছিল দ্বিতীয় উষ্ণতম জানুয়ারি-অগাস্ট।’ আবহবিদদের একাংশের অনুমান, ২০২৪ সালেও গরমের দাপট একই রকম থাকবে।
২০২৩-এর মার্চ মাস থেকেই প্রশান্ত মহাসাগরের সমুদ্রতল গরম হতে শুরু করেছে। যা গোটা পৃথিবীর আবহাওয়ার উপরেই প্রভাব বিস্তার করে। ভারতের আবহাওয়ার উপরে এর প্রভাব অত্যন্ত বেশি৷ পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের পশ্চিম উপকূল ঘেঁষে পেরু, ইকুয়েডর বরাবর কোনও কোনও বছর ডিসেম্বর মাস নাগাদ যে উষ্ণ দক্ষিণমুখী স্রোতের সৃষ্টি হয়,তারই নাম এল নিনো।
এদিকে, লক্ষ্মীপুজোর আগে হামুন নিয়ে চিন্তায় ছিল বঙ্গবাসী৷ দশমী হতেই শুরু হয়ে গিয়েছে লক্ষ্মী পুজোর আয়োজনের তোরজোড়। এর মধ্যেই ঘূর্ণিঝড়় হামুন নিয়ে চওড়া হয়েছিল চিন্তার ভাঁজ। যদিও আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, হামুন নিয়ে কোনও চিন্তা নেই৷ আপাতত বাংলায় এর কোনও প্রভব পড়বে না। বুধের সকালেই বঙ্গোপসাগরে শক্তিক্ষয় শুরু হয়েছিল এই ঘূর্ণিঝড়ের৷ এই সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় এখন নিম্নচাপে পরিণত। তবে হামুনের প্রভাবে রাতের দিকে তাপমাত্রা কিছুটা কমতে শুরু করেছে। হালকা হিমেল আমেজ উপভোগ করছে দক্ষিণের জেলাগুলি।