ছুটি সত্ত্বেও স্কুলে যেতে হবে শিক্ষকদের? গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর

ছুটি সত্ত্বেও স্কুলে যেতে হবে শিক্ষকদের? গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা শিক্ষামন্ত্রীর

797b1ab70246b685413c809ea17c50d1

 

কলকাতা: করোনা আতঙ্কে ইতিমধ্যেই বাংলার সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার৷ কিন্তু পৃথক পৃথক দপ্তরের স্কুল ছুটির বিজ্ঞপ্তি ঘিরে তৈরি হয় চূড়ান্ত ধোঁয়াশা৷ বিজ্ঞপ্তির বয়ান ঘিরে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন শিক্ষকদের একাংশ৷ কোন বিজ্ঞপ্তি সঠিক? মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে জারি করা প্রেস রিলিজ, নাকি শিক্ষা দপ্তর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি? ছুটির বিজ্ঞপ্তি নিয়ে প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিল শিক্ষক মহলে৷ এই বিভ্রান্তি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে আজ বিকেল ডটকম৷ জোটা বিজ্ঞপ্তি ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হওয়ায় এবার কড়া জবাব দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷়

জোড়া বিজ্ঞপ্তির ধোঁয়াশা কাটাতে শিক্ষা দপ্তর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পৃথক পৃথক বিজ্ঞপ্তি এক মন্তব্যে উড়িয়ে দিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ আজ বেহালার পূর্বে ‘বাংলার গর্ব মমতা’ কর্মসূচির প্রচারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন শিক্ষামন্ত্রী৷ সেখানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী জানান, প্রয়োজন পড়লে শিক্ষকদের স্কুলে যেতে হবে৷ প্রয়োজন না থাকলে যাওয়ার দরকার নেই৷ একইসঙ্গে শিক্ষকদের তাড়াতাড়ি মাধ্যমিকের খাতা দেখার পরামর্শ দেন শিক্ষামন্ত্রী৷

এদিন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘না কোনও ধোঁয়াশা নেই৷ আমি বলছি, কোনও ধোঁয়াশার কিছু নেই৷ মাধ্যমিকের খাতা দেখুক শিক্ষকরা৷ সেটাও তো দেখার কাজ৷ সেটা তাড়াতাড়ি দেখুক৷ যেখানে যখন দরকার পড়বে.., স্কুল তো ক্লোজড! শিক্ষকরা যাবে না৷ শিক্ষকদের যদি সেই স্কুলে দরকার হয়, নিশ্চয়ই তাঁরা যাবেন৷ কিন্তু, দলবেঁধে ৪০ জন যাবে, যদি কাজ থাকলে যাবে! কাজ না থাকলে যাবে না৷ শিক্ষকরা এই আওতায় পড়ছেন৷ আর আপনারা যে ধোঁয়াশা বলছেন, আমি পরিষ্কার করে বলছি, যদিও সরকারের তরফ থেকে সই করা হয়েছে ক্লোজড৷ তার বাইরে গিয়ে অন্য রকম ব্যাখ্যা দেওয়া যদি হয়ে থাকে, বা কেউ যদি ব্যাখ্যা দেয়, আমি বলব মূল সরকারি যে তরজমা, বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছে সেই বিজ্ঞপ্তি অনুসারে আমাদের সকলের চলা উচিত৷’’

শনিবার দুপুরে সপ্তম রাজ্য হিসাবে বাংলায় সমস্ত স্কুল-কেলজ বন্ধ রাখার ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তর৷ স্কুল ছুটির ঘোষণা হলেও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা নেওয়া হবেও সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ আগামী সোমবার থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল, কলেজ বন্ধের ঘোষণা করা হয়েছে৷ আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সমস্ত স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসা৷ বন্ধ থাকবে সমস্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও৷ স্কুলের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা নেওয়ার কাজ বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে৷ একই সঙ্গে এসএসকে, এমএসকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে৷ তবে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময়সূচিতে কোনও পরিবর্তন হবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দপ্তর থেকে ঘোষণা করা হয়েছে৷ ৩০ মার্চ পরিবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ কিন্তু, বিপত্তি তৈরি হয়েছে শিক্ষা দপ্তর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের বিজ্ঞপ্তি ঘিরে৷ তবে, পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের জারি বিজ্ঞপ্তিতে তেমন কিছুই বলা হয়নি৷

0a3b536be2b0eb2dfe3dd23510effb21

উপরে মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর থেকে দেওয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি৷ নীচে শিক্ষা দপ্তর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের জোড়া বিজ্ঞপ্তি৷

a73b73fe0be3ad3db7d12b41ea376dcc

শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের দাবি ছিল, ‘‘স্কুল ছুটি নিয়ে দু’রকম নির্দেশিকা কেন? করোনা ভাইরাসের কারণে রাজ্যের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আগামী ১৬ মার্চ থেকে ৩১মার্চ পর্যন্ত সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছেন৷ আবার শিক্ষা দপ্তরের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশিকা জারি করে জানিয়েছেন ক্লাস সাসপেনশনের কথা৷ ক্লাস সাসপেনশন মানে বিদ্যালয় সম্পূর্ন বন্ধ নয়৷ কেবলমাত্র ক্লাস বন্ধ থাকবে৷ তাহলে কী নিয়ম অনুযায়ী শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীদের বিদ্যালয়ে যেতে হবে? এ ব্যাপারে দু'ধরনের নির্দেশিকা কেন? যদিও বিদ্যালয়গুলিতে একাদশ ও উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা চলছে৷ সেগুলি যথারীতি চলবে৷ কিন্তু অন্যান্য দিনগুলি শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীরা কী করবেন, সে ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশিকা নেই। বিগত দিনে এরকম নির্দেশিকাকে ঘিরে বহু বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল৷ বিভ্রান্তি সৃষ্টি না করে পরিষ্কারভাবে নির্দেশিকা জারি করা হোক৷ কোন নির্দেশিকা মেনে চলা হবে তা পরিষ্কারভাবে জানানো হোক৷ ’’

আজ শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্যের পর শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানিয়েছেন, ‘‘বিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের বিদ্যালয় যাওয়ার ব্যাপারে নির্দেশিকা ঘিরে যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়েছিল. সে ব্যাপারে আজ শিক্ষামন্ত্রী পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেওয়ায় ধোঁয়াশা কাটল৷ শিক্ষামন্ত্রীকে অভিনন্দন জানাই৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *