শান্তিনিকেতন: ১৭ আগস্ট বিশ্বভারতীর মেলার মাঠ ঘিরে ফেলা নিয়ে দেখা দিয়েছিল অভূতপূর্ব চিত্র। তৃণমূল নেতা নরেশ বাউড়ির নেতৃত্বে শয়ে শয়ে মানুষ এসে ভাঙচুর করে ক্যাম্পাসে। ভেঙে দেওয়া হয় ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঁচিল। বিশ্বভারতী চত্বর কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় সেদিন। সেদিনের ঘটনার তদন্ত করতে আগে একবার ক্যাম্পাসে এসেছিল এনফোর্সমেট ডিরেক্টরেট টিম। আজ, বৃহস্পতিবার ফের বিশ্বভারতীতে হাজির হল ইডি-র দল।
১৭ আগস্টের ঘটনার তদন্ত করতে গোটা বোলপুর চত্বর ঘুরে দেখছেন তাঁরা। প্রথমে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এবং কর্তৃপক্ষের অন্যান্য সদস্যদের সঙ্গে ঘণ্টাদুয়েক বৈঠকে বসে ইডির তিন সদস্যের দল। সেদিনের ঘটনায় কোনও আর্থিক লেনদেনের বিষয় লুকিয়ে আছে কি না তাও খতিয়ে দেখবে তদন্তকারী দল।
১৭ আগস্ট সকাল থেকেই ক্রমে রণক্ষেত্রের চেহারা নিয়েছিল বিশ্বভারতী চত্বর। পাঁচিল নির্মাণের জন্য রাখা ঢালাই মেশিন ফেলে দেওয়া হয়। তৃণমূল বিধায়ক নরেশ বাউড়ি দাবি করেছিলেন, এই ঘটনায় রাজনীতির রং নেই, সবটাই মানুষের স্বতস্ফূর্ত প্রতিবাদ। বিশ্বভারতীর আচার্য তথা পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় ঘটনায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। টুইট করে তিনি লেখেন, ‘বিশ্বভারতীর আইন শৃঙ্খলা উদ্বেগজনক। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এই শিক্ষামন্দিরে শান্তি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। উপাচার্যের কথা অনুযায়ী বহিরাগতরা এসে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে সম্পত্তি ধ্বংস করেছে। সিএস, ডিএম, এইচএস, এসপি এবং মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ে ফোন করলেও উত্তর পাওয়া যায়নি।’
এই তাণ্ডব চলার পর অবশেষে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বিশ্বভারতী বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই আশ্রমিক এবং পড়ুয়াদের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, তৃণমূলের লোকেরা অনেকদিন ধরেই শান্তিনিকেতন চত্বরে জমি অধিগ্রহণ করে চলেছে। পৌষমেলার মাঠ পাঁচিল দিয়ে ঘেরার কাজ শুরু হওয়ায় তাই এই তাণ্ডব। ওদিকে, রাজ্যপালের উদ্বেগ সম্বলিত টুইটকে গুরুত্ব দেননি তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানান, জেলা আধিকারিকরা বিশ্বভারতীর বিষয়টা পর্যালোচনা করে যা করার করবেন।