ভোটের আগে তৃণমূলে চিটফান্ড কাঁটা! এবার মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে তলব করল ED

ভোটের আগে তৃণমূলে চিটফান্ড কাঁটা! এবার মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে তলব করল ED

ed

কলকাতা: লোকসভা ভোটের আগে চিটফান্ড মামলায় ফের নড়েচড়ে বসল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা৷ দিন কয়েক আগে বিজেপি বিধায়ক তথা প্রাক্তন তৃণমূল নেতা মুকুল রায়ের বাড়িতে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হাজির হয়েছিলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর অফিসাররা। এবার চিটফান্ড মামলার তদন্তে তলব করা হল রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে। অ্যালকেমিস্ট চিটফান্ড মামলায় তাঁকে ডেকে পাঠানো হয়েছে। তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে চিঠি পাঠানো হয়েছে বিদ্যুৎ মন্ত্রীকে৷

দশ বছর আগে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যে চিটফান্ড মামলার তদন্ত শুরু করেছিল সিবিআই। পরে এই মামলার তদন্তে নামে ইডি। তবে মাঝে দীর্ঘ সময় কার্যত শীত ঘুমে চয়ে গিয়েছিল চিটফান্ড মামলা। ধুলো জমেছিল ফাইলে৷ লোকসভা ভোটের আগে হঠাৎ করেই যেন গা ঝারা দিয়ে উঠল ইডি৷ সূত্রে খবর, অ্যালকেমিস্ট চিটফান্ডের লেনদেন সংক্রান্ত নথি ঘেটে দেখা গিয়েছে, এই সংস্থার কয়েক কোটি টাকা একটি অ্যাকাউন্টে গিয়েছে। তবে সেই টাকা ব্যবসায়িক লেনদেনের জন্য ব্যয় করা হয়নি। তাহলে কেন মোটা অঙ্কের টাকা নির্দিষ্ট ওই অ্যাকাউন্টে পাঠানো হল? সেই হিসেব মেলাতেই নথি সামনে রেখে তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ অরূপ বিশ্বাসকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ইডি। 

অরূপ বিশ্বাস দক্ষিণ কলকাতার নেতা। রাজনৈতিক মহলে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন বলেই পরিচিত। মন্ত্রী তথা মেয়র ফিরহাদ হাকিমের মতই দিদির ইনার সার্কেলে অন্যতম মুখ অরূপ৷ একের পর এক নেতা মন্ত্রী যখন দুর্নীতির অভিযোগে ইডি-সিবিআই-এর হাতি বন্দি, তখন নতুন করে অরূপকে ইডি-র তলব নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়েছে। যদিও তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিরোধীদের হাতে এখন মোক্ষম অস্ত্র নিয়োগ দুর্নীতি৷ হঠাৎ করে চিটফান্ড কেলেঙ্কারি মাথা তোলায় বিরোধীদের পালে হাওয়া লাগল বৈকি!  

জানা গিয়েছে নোটিস পাওয়ার পর অরূপ ইডি-র কাছে সময় চেয়েছেন৷ তাঁকে ওই সময় দেওয়া হবে কিনা, তা নিশ্চিত নয়৷ তবে ইডির তলব আসতেই আসরে নেমেছে তৃণমূল৷ দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ পাল্টা তোপ দেগেছেন বিজেপির বিরুদ্ধে৷ তিনি বলেন, অ্যালকেমিস্টের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর ছিলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তাঁকে বিজেপি  সরকার পদ্মভূষণ দিচ্ছে। আর একে তাকে নোটিশ পাঠিয়ে পাঠাচ্ছে। সবার আগে তো মিঠুনকেই গ্রেফতার করা উচিত। পাল্টা বিজেপি মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, মিঠুন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে প্রমাণ থাকলে তৃণমূল আদালতে যাক৷ রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হলে আদালতে গিয়ে তারা সেকথা জানাচ্ছে না কেন? অরূপ বিশ্বাসকে নিয়ে কারও আগ্রহ নেই৷ সবাই মাথাকে শ্রীঘরে দেখতে চায়।

সেবি-র অনুমতি ছাড়াই লগ্নিকারীদের থেকে ১,৯১৬ কোটি টাকা তোলার অভিযোগ ওঠে ‘অ্যালকেমিস্ট ইনফ্রা রিয়ালটি’র বিরুদ্ধে। ওই সংস্থার মালিক ছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ কেডি সিং। আর্থিক তছরুপের অভিযোগে ঠিক ২১-এর বিধানসভা ভোটের আগে কেডি সিংকে গ্রেফতার করে ইডি। কেডির সঙ্গে মুকুলের ঘনিষ্ঠতার সূত্রে সমন পাঠানো হয় কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়কের বাড়িতে৷ তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে মুকুল এখন ঘরবন্দি। সক্রিয় রাজনীতি থেকেও বিচ্ছিন্ন৷  গত সপ্তাহে তাঁর কাঁচরাপাড়ার বাড়িতে গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে আসেন ইডি-র তদন্তকারী অফিসাররা। এবার তলব এল অরূপের কাছে। তবে, মন্ত্রী হিসেবে নয়, চিটফান্ড মামলায় অরূপকে চিঠি পাঠানো হয়েছে তৃণমূলের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে৷ 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − 10 =