দৃষ্টিহীনদেরও ভোটের ডিউটি! কমিশনের তলবে নাজেহাল ভোট কর্মীরা

একটানা ট্রেনিংয়ের পর শুধু চা বিস্কুট দিয়েই বিদায় দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন ভোট কর্মীরা

কলকাতা: রাজ্যে এসে পৌঁছেছে কেন্দ্রীয় বাহিনী। আর তার সাথে সাথেই যেন পশ্চিমবঙ্গে ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের দামামাটা বেজে গেছে পুরোদমে। ভোট যে আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা নির্বাচনী প্রস্তুতিতেই তার পরিচয় মিলছে। রাজ্যে ভোট কর্মীদের প্রশিক্ষণও শুরু করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। কিন্তু এই আবহেই কমিশনের নানা কার্যপ্রক্রিয়া নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।

রাজ্য সরকারি কর্মচারী হিসেবে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ভোটের কাজে সহায়তার জন্য নিয়োগ করা হয়। কিন্তু দৃষ্টিহীন ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রেও কি একই নিয়ম প্রযোজ্য? শুরু হয়েছে বিতর্ক। জানা গেছে, সম্প্রতি প্রতিবন্ধীদের কাছেও ভোটের দায়িত্ব চাপিয়ে নিয়োগপত্র পাঠানো হচ্ছে কমিশনের তরফ থেকে। শিক্ষা ক্ষেত্রে এর বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। যথেষ্ট সাধারণ শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও কেন শারীরিক প্রতিবন্ধী তথা দৃষ্টিহীনদের অব্যাহতি দেওয়া হবে না? কেনই বা তাঁদের ভোটের মুখে দায়িত্ব থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য হন্যে হয়ে দফতরে দফতরে ঘুরে বেড়াতে হবে? প্রশ্নের মুখে পড়েছে কমিশন।

এখানেই শেষ নয়, ভোট কর্মীদের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা নিয়েও শিক্ষা মহলের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। অভিযোগ, একাধিক জায়গায় এক টানা প্রায় ৬-৭ ঘন্টা ট্রেনিংয়ের মাঝে সামান্য চা বিস্কুট ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থাই রাখা হচ্ছে না কর্মীদের জন্য। আবার কোনো কোনো স্থানে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থার কথাও শোনা যাচ্ছে। কমিশনের কাছে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের তরফে রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারীর প্রশ্ন, “একই নির্বাচন কমিশনের অধীনে একই বিষয়ে ট্রেনিং-এর ক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন ব্যবস্থা কেন? বরাদ্দ অর্থ যাচ্ছে কোথায়?” এই দ্বিচারিতার জবাব কমিশনকে দিতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

প্রতিবন্ধী তথা দৃষ্টিহীন কর্মীদের ভোটের আগে এই হয়রানির ছবিটা নতুন নয়। এ প্রসঙ্গে মথুরাপুরের একটি স্কুলের সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন শিক্ষক নীলু মিস্ত্রি জানিয়েছেন, “আমি জানি শেষ পর্যন্ত আমাকে ভোটের ডিউটি থেকে ছাড় দেওয়া হবে। এর আগেও এ নিয়ে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। আমার প্রশ্ন কেন ভোটের ডিউটির জন্য আমাকে কমিশন নিয়োগপত্র পাঠাবে?” এছাড়া ট্রেনিংয়ে একটানা কাজ করার পর যে সাম্মানিক কর্মীদের জন্য  বরাদ্দ করা হচ্ছে তা অত্যন্ত অসম্মানজনক বলেও উঠেছে অভিযোগ। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

6 + 18 =