দ্বারভাঙা: করোনাকালে যেখানে হাসপাতালের প্রয়োজন, সেখানে বিহারের দ্বারভাঙা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের অবস্থা তথৈবচ৷ প্রাচীন এই চিকিৎসাকেন্দ্রে একদিনের বৃষ্টিতেই এক হাঁটু জল জমে যাওয়া যেন নিত্যদিনের ঘটনা। করোনা নয়, এখানকার চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হল দূষণ এবং আবর্জনার স্তূপ পেরিয়ে হাসপাতালে প্রবেশ করা। করোনা বিধির বালাই নেই, এই হাসপাতাল কার্যত খোয়াড়ে পরিণত হয়েছে। এই করোনা পরিস্থিতিতে প্রশাসন সজাগ না হলেও বড় বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
স্বাস্থ্যকর্মীরা জানাচ্ছেন, ১০০ বছর পূর্ণ করতে চলা দ্বারভাঙা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের কর্মীদের মুখে ত্রাহি রব। এক নার্স বললেন, ‘আর সহ্য করা যাচ্ছে না।’ জল ঠেঙিয়ে হাসপাতালে যাতায়াত করা নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত হওয়া এই নার্সের ২৬ বছরের চাকরি জীবনে পরিস্থিতির এতটুকু পরিবর্তন হয়নি বলেই দাবি৷ উলটে ভাঙা রাস্তা, আবর্জনার স্তূপ, শুয়োরের অবাধ যাতায়াতে এই হাসপাতাল করোনা ভাইরাস ছাড়াও অন্যান্য রোগের আতুরঘরে পরিণত হয়েছে বলে দাবি ওই নার্সের। একই সুর শোনা গেল হাসপাতালের অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের গলাতেও।
হাসপাতাল নিয়ে সমস্যার কথা মেনে নিলেও সুপার জানান, করোনাকালে তাঁরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে চলেছেন৷ বিহারের শতাব্দীপ্রাচীন হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীরা নিজেদের শেষ রক্তবিন্দু দিয়েও রোগীদের সুস্থ করে তুলতে বদ্ধপরিকর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে হাত লাগিয়েছেন বলে জানিয়েছেন সুপার। এমনকি তাঁদের প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত অক্সিজেন এবং ওষুধ রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি। দ্বারভাঙার ওই এলাকায় জল জমে থাকার কথা মেনে নিয়েছেন জেলার ডিডিসি তনয় সুলতানিয়া। তিনি জানিয়েছেন, জেলাশাসক ১৫ দিনের মধ্যে হাসপাতাল সংলগ্ন রাস্তা মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন৷ এ রাজ্যে ইতিমধ্যেই করোনার পাশাপাশি হোয়াইট ছত্রাকের সংক্রমণের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। অথচ এর মধ্যে দ্বারভাঙা হাসপাতালের এই বেহাল দশায় অস্বস্তিতে প্রশাসন। সরকার বদলালেও হাসপাতালের পরিস্থিতি পরিবর্তন না হওয়া নিয়ে চিন্তিত রোগী এবং তাঁদের আত্মীয়রাও।