‘রাজনৈতিক আলোচনা করবেন না’, চায়ের দোকানে অভিনব পোস্টার! কেন নিলেন এমন সিদ্ধান্ত?

‘রাজনৈতিক আলোচনা করবেন না’, চায়ের দোকানে অভিনব পোস্টার! কেন নিলেন এমন সিদ্ধান্ত?

‘রাজনৈতিক আলোচনা করবেন না’ ভোট আবহে পোস্টার পড়ল চায়ের দোকানে। পূর্ব বর্ধমানের বড়শুল বাজারের চায়ের দোকানে দেওয়া এই পোস্টার ঘিরে শুরু হয়েছে আলোচনা। চায়ের দোকান, পাড়ার রকে রাজনৈতিক আলোচনা বাংলার সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে বহুকাল ধরেই… গরম গরম ধোঁয়া ওঠা চায়ের কাপে চুমুক তুলে সকাল-সন্ধ্যা রাজনীতির চর্চায় গলা ফাটানো বাঙালীর পুরনো অভ্যেস। কিন্তু, ভোট আবহে সেই অভ্যাসেই সিঁদুরে মেঘ দেখছেন মণ্ডল দম্পতি। ভোটের আঁচ থেকে বাঁচাতে চান সাধের দোকান। সেই কারণে দোকানে পোস্টার সাঁটিয়েছেন দুর্জয় মণ্ডল ও ভারতী মণ্ডল। পোস্টারে আবেদন- “নির্বাচনের দিনক্ষণ চুড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। আপনাদের কাছে অনুরোধ, দোকানে রাজনৈতিক আলোচনা করিবেন না।” দোকানের খদ্দেরদের আগাম সতর্ক করে পোস্টার দোকানির। তবে এবারই প্রথম নয় বিধানসভা নির্বাচনের আগেও একই পোস্টার সাঁটিয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কেন এই আবেদন? 

দিনক্ষণ ঘোষণার পর থেকেই পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে রাজ্যের নানা প্রান্ত। ভোটের আঁচ ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে। ভোট রাজনীতির চর্চাকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই গমগম করছে চায়ের দোকান।  সেই চর্চা থেকে যাতে কোনওরকম উত্তেজনা তৈরি না হয়, সেই আশঙ্কায় দোকানে পোস্টার সাঁটিয়েছেন বৃদ্ধ দম্পতি। 

বড়শুলের পুরনো বাসস্ট্যাণ্ডের এই চায়ের দোকান জেঠুর চায়ের দোকান নামেই এলাকার মানুষের কাছে পরিচিত। প্রায় ৪৩ বছর ধরে এই চায়ের দোকান চালাচ্ছেন মণ্ডল দম্পতি। একমাত্র ছেলে বিশেষ ভাবে সক্ষম হওয়ায় জীবিকার পুরো ভারটাই অশক্ত এই কাঁধগুলোর উপর। ভোর থেকে প্রায় রাত ১০টা পর্যন্ত বৃদ্ধ দম্পতির এই যুদ্ধ চলে।দম্পতি জানান, তাঁদের চায়ের দোকানে সকাল থেকেই বহু ধরণের লোকজন আসেন। সেই সময় বিভিন্ন কথার ফাঁকে রাজনৈতিক আলোচনাও চলে জোর কদমে । কথা বাড়তে বাড়তে মতভেদ দেখা দিলেই বেড়ে যায় অঘটনের সম্ভাবনা। দোকানের আয় থেকে কোনও রকমে সংসার চলে। কাজেই সেই দোকান যদি লাটে উঠে যায় তাহলে তো না খেতে পেয়ে মরতে হবে পরিবার নিয়ে। দোকানে রাজনীতি সংক্রান্ত আলোচনা চান না তাঁরা। দোকানে রাজনৈতিক আলোচনা শুরু হলে দোকানের শান্তি বিঘ্নিত হবে। কমে যাবে খরিদ্দারের আনাগোনা। রাজনৈতিক উত্তাপ যাতে চায়ের দোকানে এসে না পড়ে সে জন্যই চায়ের দোকানে এহেন পোস্টার লাগিয়েছেন দুর্জয় মণ্ডল। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *