লন্ডন: করোনা পরীক্ষক কুকুর! লন্ডন স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের গবেষকরা দাবি করেছেন, করোনা আক্রান্তদের চটজলদি চিহ্নিত করতে কাজে লাগতে পারে কুকুর৷ কোনও মানুষের শরীরে করোনা বাসা বাঁধলে, তা তাঁর না ধোয়া পোশাক বা মোজা শুঁকেই পজিটিভ না নেগেটিভ বলে দিতে পারবে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই কুকুর।
গত বছরই করোনা নিয়ে নানা গবেষণা শুরু করেন বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানীরা৷ এই কাজে পিছিয়ে ছিলেন না জীববিজ্ঞানীরাও৷ বিশ্বের কয়েকটি দেশের জীববিজ্ঞানীরা গত বছরই করোনা নিয়ে কাজ শুরু করেন। বিট্রেনে গত একমাসে দু’টো গবেষক দলের একটি গবেষণার প্রথম পর্যায়ে যে তথ্য উঠে এসেছে তাতে দেখা গিয়েছে, প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষের কাচার আগের পোশাক ও মোজা শুঁকে তাঁদের মধ্যে কোভিড আক্রান্তদের শনাক্ত করতে পেরেছে বায়ো-ডিটেকশনে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সারমেয়গুলি৷ এখানেই শেষ নয়, তারা উপসর্গহীন, মৃদু উপসর্গযুক্ত ব্যক্তিদেরও শুঁকে ধরতে পারছে৷ এমনকি গত বছর ব্রিটেনে যে মিউট্যান্ট ভেরিয়ান্টের উৎপত্তি হয়েছিল, তাতেও আক্রান্তদের শুঁকে সহজেই ধরতে পেরেছে এই কুকুরগুলি।
ব্রিটেনের এই গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, কয়েক সপ্তাহের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পর প্রায় ২00 জন কোভিড পজিটিভ ও ২00 জন কোভিড নেগেটিভ ব্যক্তির না ধোয়া জামাকাপড় ও মোজা শুঁকে সঠিকভাবে চিহ্নিত সক্ষম প্রশিক্ষিত সারমেয়গুলি৷ ভিড়ের মধ্যে কোভিড আক্রান্তদের দ্রুত ও সঠিক চিহ্নিতকরণের কাজে আরটিপিসিআর টেস্টকেও পিছনে ফেলে দিয়েছে এই প্রশিক্ষিত সারমেয়রা৷ গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ডারহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞানের অধ্যাপক স্টিভ লিন্ডসে বলেন, ‘বিমানবন্দরের মতো জনবহুল জায়গায় কোভিড আক্রান্তদের চিহ্নিতকরণের কাজ সহজ ও দ্রুত করে দেবে এই ধরনের কুকুর। প্রায় ৯২-৯৪ শতাংশ ক্ষেত্রেই সঠিক চিহ্নিতকরণ সম্ভব হয়েছে৷’ ইতিমধ্যেই, ফিনল্যান্ড, জার্মানি, চিলির বিমানবন্দরগুলিতে এই ধরনের কুকুর দিয়ে করোনা আক্রান্তদের শুঁকে চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। এই প্রক্রিয়া সফল হলে এয়ারপোর্ট বা স্টেডিয়ামের মতো অন্যান্য জনবহুল এলাকাগুলোয় করোনা রোগীদের চিহ্নিতকরণে এদের ব্যবহার করা যাবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা
তবে বিশেষ বায়ো ডিটেকশন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই কুকুর গবেষণাগারের বাইরে মানুষের ভিড়ে কোভিড আক্রান্তদের চিহ্নিতকরণের কাজে কতটা সফল হয়, এখন সেটাই দেখার৷