কলকাতা: নির্বাচনের আগে বরাবরই চর্চার কেন্দ্রে জায়গা করে নেয় রাজনীতিবিদদের সম্পত্তির খতিয়ান। সব দলেরই ধনী ও দরিদ্র প্রার্থীদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি নিয়ে চলে চুলচেরা বিশ্লেষণ। কিন্তু বলুন তো একদন বিধায়কের সম্পত্তির পরিমাণ সর্বোচ্চ কত হতে পারে? কম হলেই বা কত? সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মস বা ADR-এর একটি রিপোর্ট৷ তাতে দেখা গিয়েছে, সর্বোচ্চ অঙ্কটা ১৪০০ কোটি টাকা! এখন স্বভাবতই কৌতুহল জাগবে এই বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির মালিক কোন রাজ্যের এবং কোন দলের বিধায়ক?
তাহলে বলি দেশের সবচেয়ে ধনী বিধায়ক হলেন কর্নাটকে সদ্য উপ-মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়া ডিকে শিবকুমার৷ তাঁর অ্যাকাউন্টেই রয়েছে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ। এই রিপোর্টে দেশের সবচেয়ে গরিব বিধায়কের নামও উঠে এসেছে। তিনি পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিবিদ৷ বিজেপি বিধায়ক। তাঁর অ্যাকাউন্টে নাকি রয়েছে মাত্র ১ হাজার ৭০০ টাকা! তিনি বাঁকুড়ার ইন্দাসের বাসিন্দা৷ নাম নির্মল ধারা। একটি পুরনো পাকা বাড়ি তাঁর ঠিকানা৷ আগে বাড়িটি একতলাই ছিল৷ সম্প্রতি দোতলা হয়েছে। কয়েক দিন আগে একখানি গাড়িও কিনেছেন৷ তবে আশপাশের এলাকায় তাঁকে প্রায়ই পায়ে হেঁটে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়৷ স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে প্রায়ই কথাবার্তা বলেন তিনি।
এ দেশে ধনসম্পত্তির এহেন অসম বণ্টন নতুন কিছু নয়। বিশেষ করে রাজনৈতিক মহলে নেতানেত্রীদের মধ্যে এমন অর্থের বৈসাদৃশ্য প্রায়ই সামনে আসে। দেশের মুখ্যমন্ত্রীদের সম্পত্তির মধ্যেও বৈষম্য রয়েছে। যেমন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাকি রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদের তুলনায় ‘গরিব’ বললে অত্যুক্তি হয় না৷
রাজনীতিতে আসার আগে ব্যবসা করতেন শিবকুমার। রাজনীতিবিদ হওয়ার পরে দেখা যায় তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা৷ এমনটাই বলছে এডিআর-এর রিপোর্ট। তবে তিনি একা নন, ওই রিপোর্ট অনুযায়ী দেশের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দুই ধনী বিধায়কও কর্নাটকেরই। তাঁদের মধ্যে একজন নির্দল বিধায়ক কেএইচ পুট্টস্বামী গৌড়া৷ তাঁর ঘোষিত সম্পদের পরিমাণ ১ হাজার ২৬৭ কোটি টাকা এবং অপর জন হলেন কংগ্রেস বিধায়ক প্রিয় কৃষ্ণ। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ১ হাজার ১৫৬ কোটি টাকা। উল্লেখ্য বিষয় হল, ধনী বিধায়কের ওই তালিকার প্রথম ২০ জনের মধ্যে ১২ জনই এই রাজ্যের।
এই রিপোর্ট ঘিরে বিস্তর বিতর্ক দানা বেঁধেছে৷ যদিও উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমারের দাবি, ‘আমি ধনীতম নই। তবে দরিদ্রও নই। দীর্ঘ দিন ধরে আমি এই সম্পদ অর্জন করেছি। আমার সব টাকা আমার নামেই আছে। অন্য অনেকেরই অনেক সম্পত্তি বেনামে ছড়িয়ে রয়েছে।’
বিধায়কদের এই তালিকার শেষ প্রান্তে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি বিধায়ক নির্মল কুমার ধারা। তাঁর মোট সম্পত্তি ২ হাজার টাকারও কম। নির্মলের চেয়ে একটু উপরে রয়েছে ওড়িশার নির্দল বিধায়ক মকারান্দা মুদুলি৷ তাঁর পকেটে রয়েছে মাত্র ১৫ হাজার টাকা৷ এর পরে রয়েছেন পঞ্জাবের আপ বিধায়ক নরিন্দর পাল সিং সাওনারা, যাঁর মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৮ হাজার ৩৭০ টাকা।