কলকাতা: এখনও মুসলিম ভোটাররা বিজেপিকে ভোট দেননি। পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম ভোটকে বিজেপি ‘কন্ট্রোল’ করে না। বক্তব্য, রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের। তিনি আরও জানিয়েছেন, যদি মুসলিমরা তৃণমূল কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএমকে ভোট না দিয়ে অন্য কাউকে ভোট দেয়, তাহলে ধরে নিতে হবে ওই তিন পার্টি মুসলিমদের ধোকা দিয়েছে। আসাউদ্দদিন ওয়াইসির All India Majlis-e-Ittehadul Muslimeen বা সারা ভারত মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল-মুসলিমিন (মিম) পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনে লড়াই করবে বলে ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে। সেক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের ৩২ শতাংশ মুসলিম ভোট – যা ব্যাপকার্থে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট ব্যাংক বলে চিহ্নত – তা কী ভাগ হয়ে যেতে পারে, এমন প্রশ্ন উঠে এসেছে। সে প্রসঙ্গে দিলীপবাবুর বক্তব্য, মিম কী করবে জানি না। তবে মুসলিমরা এতদিন যাদের ভোট দিয়েছেন, তারা ধোকা দেওয়ার পর হয়ত বিকল্প খোঁজা হচ্ছে। এই কারণেই বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সভায় এত ভিড় হচ্ছে।
সম্প্রতি বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ৫টি আসন পেয়েছে মিম। অনেকেই মনে করছে, তা বিজেপিকে আরজেডির বিরুদ্ধে সুবিধা করে দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেও কী মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল-মুসলিমিন (মিম) এমন খেলা দেখাবেন? অসহায় হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়? তা সময় বলবে। পশ্চিমবঙ্গের ৩২ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোটব্যাংক’কে সুরক্ষিত রাখতে বদ্ধপরিকর তৃণমূল কংগ্রেস। সেই কারণেই আসাদুদ্দিন ওয়াইসি’র এএইএমআইএম-কে দেখে যেন লাল-সংকেত দেখছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
উত্তরবঙ্গে একটি সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওয়াইসিকে নিশানা বানিয়েছিলেন, সেই বিধানসভা কেন্দ্র কালিয়াগঞ্জে কিছু সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। শুধু তাই নয়, উত্তরবঙ্গেও রয়েছে সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকের একটি বড় অংশ। মমতা কখনোই চাইবেন না, এই বিপুল ভোটব্যাংক, যা শেষ ৭-৮ বছর ধরে তাঁর দিকেই তাকিয়ে আছে, তা হঠাৎ দূরে সরে যাক।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা রাজ্যে আগামীদিনে এন আর সি-কে মেরুকরণের বার্তাবাহক হিসাবে ধরছেন। সেই কারণেই, বিজেপি এবং তৃণমূল (যথাক্রমে এন আর সি-এর সমর্থক এবং বিরোধী) ভোট ভাগাভাগি করে নেবে, সেই আশঙ্কা করা হচ্ছে। সেক্ষেত্রে তৃতীয় শক্তি হিসাবে বামে-কংগ্রেসের ভোট ব্যাংকে থাবা বসতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিকে আটকাতে হলে, তৃণমূল-ই একমাত্র বিকল্প ভোটারদের মনে করিয়ে দিতে চাইছেন মমতা। সেক্ষেত্রে, বাংলার মুসলমান সমাজ, যা দীর্ঘদিন ধরেই বাম এবং কংগ্রেসকে ভোট দিয়ে এসেছিল, তারা তৃণমূলের দিকে ঘুরেছে তা যেমন সত্য, তেমনই, মুসলিম রাজনৈতিক দল এআইএমএইএম এর দিকে ঘুরে যেতে পারে সেই আশঙ্কাও রয়েছে। সেক্ষেত্রে, আসাদুদ্দিন ওয়াইসির মত নেতা যদি মমতার ভোটব্যাংকে থাবা বসায় তবে তা সব থেকে আনন্দের বিষয় হবে বিজেপির কাছে। সেক্ষেত্রে, একজন মুসলিম নেতা এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মধ্যে পছন্দ করার মুহূর্ত আসবে৷