কলকাতা: আবহাওয়া দপ্তরের খবর বলছে, শীতের মরশুমে রাজ্যের পারদ নেমে গেছে অনেকটাই। কিন্তু বাংলার রাজনীতির দিকে চোখ রাখলে তা বোঝার উপায় নেই। একুশের বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে, রাজনৈতিক বাদানুবাদে ততই উত্তাপ ছড়াচ্ছে বাংলার পরিস্থিতিতে। রাজনৈতিক চাপানউতোরের সেই আবহেই আরো একবার বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন দিলীপ ঘোষ।
রাজ্য বিধানসভায় এবার অনাস্থা প্রস্তাব আনা হতে পারে বিজেপির তরফ থেকে, এদিন এমনটাই ইঙ্গিত দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। মঙ্গলবার সল্টলেকের সেন্ট্রাল পার্কে প্রাতঃভ্রমণে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমাদের কাছেও ভাল সংখ্যায় এমএলএ রয়েছেন। তাই বিধানসভায় অনাস্থা আনার একটা সম্ভাবনা রয়েছে।” দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য নিয়ে ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে জল্পনা।
ঠিক কী প্রসঙ্গে অনাস্থা আনার কথা বলেছেন দিলীপ বাবু? বস্তুত, গতকালই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের কৃষি আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার জন্য বিধানসভার অধিবেশন আহ্বানের কথা জানিয়েছিলেন। এদিন সেই সূত্রেই বিধানসভায় অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা বলেছেন দিলীপ ঘোষ। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি তাঁর পরামর্শ, “ভাবনা–চিন্তা করে অধিবেশন ডাকুন উনি। কারণ যদি অনাস্থা এসে যায় সরকারটাই পড়ে যাবে।”
এখানেই শেষ নয়, দিলীপ বাবুর আরো বক্তব্য, “আদৌ বাজেট সেশন হবে কিনা সেটাও চিন্তার বিষয়। যেভাবে কংগ্রেস, সিপিএম অনাস্থা আনার হুঁশিয়ারি দিয়েছে, সেটা সত্যিই যদি তারা করে তা হলে সরকার মে মাস পর্যন্ত চলবে না।” বিজেপি অনাস্থা প্রস্তাব আনলে তা সিপিআইএম বা কংগ্রেস কি সমর্থন করবে? দিলীপ বাবুর কথায়, “ওঁরা করবেন কি না তা আমি জানি না।”
দিলীপ ঘোষের অনাস্থা সংক্রান্ত এই মন্তব্যকে অবশ্য বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ শাসক শিবির। বরং এই ভাবনাকেই পাল্টা প্রশ্ন করেছেন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেছেন, “দিলীপ ঘোষের হুঁশিয়ারির কী মূল্য আছে? তিনি কোনও নিয়মকানুন জানেন না। অনাস্থা ডাকতে গেলে বিধানসভায় ১০ ভাগের একভাগ সদস্য থাকতে হয়। ২৯৪ জন সদস্য রয়েছে বিধানসভায়। অর্থাৎ ৩০ জন সদস্য দরকার বিজেপির।” তবে বিজেপির সঙ্গে বাম-কংগ্রেস জোট হাত মেলালে অনাস্থা আনা সম্ভব বলে মেনে নিয়েছেন সৌগত রায়।