নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘দিদি’কে শীঘ্রই সিবিআই ডেকে চা খাওয়াবে। এমনই মন্তব্য করলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। আর কয়েক মাস পরেই লোকসভা নির্বাচন। সবকটি রাজনৈতিক দল তার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। বসে নেই বিজেপিও। ২৯ তারিখ ধর্মতলায় বড় সমাবেশ করছে বিজেপি। উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সমাবেশ সফল করতে রাজ্য জুড়ে বিজেপির প্রস্তুতি সভা চলছে।
এই পরিস্থিতিতে রবিবার দুর্গাপুরে একটি কর্মসূচিতে উপস্থিত হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, “রাজ্যের মন্ত্রীরা ডাক পেয়েছেন। দু’জন জেলও খাটছেন। নতুন বছরে সিবিআইয়ের চা খাওয়ার নেমন্তন্ন পাবেন দিদি! রাজ্যে একশো দিনের টাকা, আয়লার টাকা, আবাস যোজনার টাকা সব চুরি হচ্ছে। তাই রাজ্যের মন্ত্রীরা সিবিআই-ইডির ডাক পেয়েছেন। দু’জন মন্ত্রী জেলও খাটছে। আর ওই দুই মন্ত্রী বলছে সবই দিদি জানে। আমরা বলছি না। দিদির ভাইয়েরা বলছে। জ্যোতিপ্রিয় বলছে সব দিদি জানে, পার্থবাবুও বলছে সব দিদি জানে। আবার কুণাল ঘোষ বলছে মক্ষিরানি। আমরা সেটা শুনে বলছি। তাঁর ভাইয়েরা জানে দিদি কার কাছে কোথায় কত টাকা ভাগ পান। নতুন বছরে সিবিআইয়ের চা খাওয়ার নেমন্তন্ন পাবেন মুখ্যমন্ত্রী। এটা বাংলার মানুষ দাবি করছে।”
তাই প্রশ্ন, তাহলে কী ‘দিদি’ বলতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন দিলীপ? যথারীতি বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা শুরু হয়েছে। এখানেই শেষ নয়, জল্পনা বাড়িয়ে এদিন দিলীপ আরও বলেছেন, “নতুন বছরে আরও কিছু নেতা মন্ত্রীকে জেলের ভাত খেতে হবে।” পালটা তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘বাস্তবটা দিলীপ ঘোষ নিজেও খুব ভালো জানেন, ইডি সিবিআই যদি নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করত, তাহলে তাঁকেও ডেকে পাঠাত৷ কারণ, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত প্রসন্ন রায়ের ফ্ল্যাটে দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল পাওয়া গেছে৷’’
ঘটনা হল বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা। আর তৃণমূলের অত্যন্ত প্রভাবশালী এক নেতার সঙ্গে দুর্নীতিগ্রস্তদের যোগ রয়েছে, এই অভিযোগ বহুদিন ধরেই করছে বিজেপি। লোকসভা নির্বাচন যত এগিয়ে আসছে ততই বিজেপির সেই অভিযোগের তীব্রতা আরও বড় আকার নিচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম করে তির্যক মন্তব্য করলেন দিলীপ। যে বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চর্চা হবে এটাই স্বাভাবিক। উল্টোদিকে তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে কার্যত দলের এজেন্সি হিসেবে ব্যবহার করছে বিজেপি। এই চাপানউতোর বহুদিন ধরেই চলছে। এই আবহের মধ্যে ধর্মতলার সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কি বার্তা দেন সেটাই দেখার।