abhishek
নয়াদিল্লি: দিল্লিতে রাজঘাটে ধর্না কর্মসূচির পর তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি মন্তব্যে নয়া জল্পনা শুরু হয়েছে। তিনি যে মন্তব্য করেছেন তাতে এটা স্পষ্ট, অতীতে কেন্দ্রে সরকার চালানো কংগ্রেসও তাঁর নিশানায় রয়েছে। কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ইস্যুতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিশানায় বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেসও থাকায় বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক হবে এটাই স্বাভাবিক।
কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে সোমবার দিল্লিতে রাজঘাটে ধর্না কর্মসূচির পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বঞ্চনা ইস্যুতে বিজেপির পাশাপাশি তাৎপর্যপূর্ণভাবে নাম না করে কংগ্রেসকেও নিশানা করেছেন। যা বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের পক্ষে যথেষ্ট অস্বস্তির কারণ হয়ে উঠল। এদিন অভিষেক স্পষ্ট বলেছেন, “বাংলাকে সবাই বঞ্চিত করেছে৷” সবাই বলতে তিনি বিজেপির আগে কেন্দ্রে সরকার চালানো কংগ্রেস আমলকেই যে বুঝিয়েছেন তা স্পষ্ট। এদিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, “১৯১১ সালে দেশের রাজধানী বাংলা থেকে তুলে দিল্লিতে নিয়ে এসেছিল ইংরেজ সরকার। এরপর থেকে কেন্দ্রের সব সরকারই বাংলাকে বঞ্চনা করেছে৷” আর ‘সব সরকারই’ শব্দবন্ধ অভিষেক যেভাবে ব্যবহার করেছেন তা নিয়েই বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গে সাড়ে তিন দশক ধরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে কেন্দ্রে থাকা তৎকালীন কংগ্রেস সরকারের বিরুদ্ধে নিয়মিত সরব হতেন বাম নেতারা। কিছুদিন আগেও একাধিক ইস্যুতে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেছে তৃণমূল। তবে ‘ইন্ডিয়া’ জোট গঠনের পর কংগ্রেস হাইকমান্ডের সঙ্গে তৃণমূলের এখন যথেষ্ট মধুর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সেই জায়গা থেকে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা ইস্যুতে সোমবার অভিষেক যেভাবে পূর্বতন কংগ্রেস সরকারকেও নিশানা করলেন, তার অভিঘাত বিরোধী জোটে কতটা পড়ে তা অন্যতম কৌতূহলের বিষয় হয়ে দাঁড়াল।
কিছুদিন আগেও বিভিন্ন ইস্যুতে কংগ্রেসের তীব্র সমালোচনা করতেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশাপাশি তৃণমূলের সর্বস্তরের নেতানেত্রীরা কংগ্রেসের সমালোচনায় সরব হতেন। তবে বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে হটাতে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’ গঠন হওয়ার পর ছবিটা বদলে যেতে থাকে। এমনকী কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর বাড়িতে গিয়ে বৈঠক পর্যন্ত করেন অভিষেক। বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র বৈঠকে ছবিতে এক ফ্রেমে দেখা যায় মমতা-অভিষেক-রাহুলকে। এটা সকলেই মনে করেন যে ছবি কথা বলে। আর এতেই স্পষ্ট কংগ্রেস-তৃণমূল কতটা কাছাকাছি এসেছে। কিন্তু অভিষেক বিজেপিকে নিশানা করতে গিয়ে যেভাবে নাম না করে অতীতে কেন্দ্রে সরকার চালানো কংগ্রেসকেও নিশানা করেছেন বঞ্চনা ইস্যুতে, তাতে কংগ্রেস-তৃণমূলের বোঝাপড়ার তাল কেটে যাবে না তো? এই চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে। তাই বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া আসে কিনা তা দেখার অপেক্ষায় থাকল রাজনৈতিক মহল।