রাজনৈতিক অশান্তির তথ্য নেই কেন, প্রশ্ন উপ-নির্বাচন কমিশনারের

রাজনৈতিক অশান্তির তথ্য নেই কেন, প্রশ্ন উপ-নির্বাচন কমিশনারের

 

কলকাতা:  রাজনৈতিক অশান্তি কম করা যাচ্ছে না কেন? রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশাসনিক কর্তাদের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করে বলেছেন উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন। বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে  নির্বাচন কমিশন৷ বিভিন্ন জেলার জেলাশাসক এবং এসপিদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সুদীপ জৈন। প্রথমে দক্ষিণবঙ্গ এবং পরে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি৷ এই বৈঠক করেছেন ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে৷

সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে বিভিন্ন ধরনের সংঘর্ষ এবং অশান্তি নিয়ে রীতিমত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন উপ-নির্বাচন কমিশনার। তার প্রশ্ন, লোকসভা ভোটের সময় উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় যে সমস্ত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হলেও তা পাওয়া যায়নি। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্যালোচনা করার জন্য তিনি কলকাতায় এসেছেন৷ রাজ্যের সংশোধিত ভোটার তালিকা নিয়েও নির্বাচন কমিশনের কাছে প্রচুর অভিযোগ এসেছে বলে জানিয়েছেন তিনি৷ গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখা হবে জানান উপ-নির্বাচন কমিশনার৷ সূত্রের খবর, এদিন তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ভোটের কাজে কোনোরকম অসঙ্গতি দেখা দিয়ে মুহূর্তেই সংশ্লিষ্ট কর্তার দায়িত্ব ছিনিয়ে নেওয়া হবে৷

আজ বিধানসভা ভোটের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে উপ-নির্বাচন কমিশনার সুদীপ জৈন রাজ্যের সব জেলার প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ গতকাল রাতে কলকাতায় পৌঁছনোর পর আজ দিনভর মধ্য কলকাতার এক পাঁচতারা হোটেলে তিনি দফায় দফায় জেলা প্রশাসনের কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, প্রশাসনিক দায়িত্ব বণ্টন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ প্রথম পর্বে আজ উপ-নির্বাচন কমিশনার কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলির জেলাশাসক, পুলিশ সুপার এবং পুলিশ কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠক করেন৷ পরবর্তী পর্যায়ে তিনি উত্তরবঙ্গের জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে ভোট প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা করেন৷ আগামীকাল তিনি রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক বীরেন্দ্রর সঙ্গে বৈঠক করবেন৷ পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন বলেও জানা গিয়েছে৷ 

প্রসঙ্গত, রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিজেপিসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির পক্ষ থেকে তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে দেওয়া হয় না বলে অভিযোগ দীর্ঘদিনের। বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের উপরে অত্যাচার করা হয়, মারধর করা হয়। এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার দাবিতে বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল বিভিন্ন ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বিধানসভা নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ততই উত্তরোত্তর রাজনৈতিক অশান্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে। তৃণমূল-বিজেপি একে অপরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে। এর আগে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর রাজ্যে অবাধ নির্বাচনের পক্ষে সওয়াল করেছেন৷ প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। ফলে বিধানসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শাসক-বিরোধী চাপান-উতোর চলছেই। নির্বাচন কমিশনের লক্ষ্য, বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন শান্তিতে সম্পন্ন করা। সেই লক্ষ্যে এখন থেকেই রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের আধিকারিকরা একাধিকবার পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার জন্য আসতে শুরু করেছেন। এর থেকে বোঝা যায় বাংলায় একুশের বিধানসভা নির্বাচনকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখতে শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। কারণ এবারের নির্বাচনে প্রত্যাবর্তন না কি পরিবর্তন, সেটা জানার অপেক্ষায় রয়েছে রাজ্যবাসী৷ -ফাইল ছবি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 13 =