death
কলকাতা: ২০১৩ সাল থেকে ২০২৩। দশ বছর পার। অবশেষে শুক্রবার বারাসতের কামদুনি গণধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করল কলকাতা হাই কোর্ট৷ এই ঘটনায় অভিযুক্ত সইফুল আলি, আনসার আলির ফাঁসির সাজা রদ করল আদালত৷ ফাঁসির বদলে তাদের আমৃত্যু কারাদণ্ডের সাজা শোনাল বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং বিচারপতি অজয়কুমার গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ। নিম্ন আদালতে অপর এক ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামী আমিন আলিকে বেকসুর খালাস করেছে আদালত। অন্য দিকে, নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজাপ্রাপ্ত ইমানুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম এবং ভোলানাথ নস্কর ১০ বছর জেল খাটার কারণে তাদের খালাস করা হয়েছে।
২০১৩ সালের ৭ জুন৷ পরীক্ষা দিয়ে কামদুনির বাড়িতে ফিরছিলেন রাজারহাট ডিরোজিও কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী৷ অভিযোগ, বাস থেকে নেমে হেঁটে বাড়ি ফেরার সময় তাঁকে রাস্তা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ পাঁচিল ঘেরা একটি ঘরে নিয়ে গিয়ে দফায় দফায় গণধর্ষণ করে ন’জন দুষ্কৃতী। পৈশাচিক নির্যাতনের পর ওই ছাত্রীটিকে ভেড়িতে ফেলে পালায় দুষ্কৃতীরা। এদিকে মেয়ে বাড়ি ফিরছে না দেখে তাঁর খোঁজ শুরু করে পরিবার৷ এলাকার লোকজনকে নিয়ে খোঁজ করতে করতে গ্রাম থেকে প্রায় তিন কিলোমিটার দূরে আট বিঘে ভেড়ি অঞ্চলে একটি পাঁচিলের পাশে রক্তাক্ত ও ক্ষতবিক্ষত ওই ছাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করে তাঁরা। এই ঘটনায় উত্তাল হয়ে ওঠে গোটা রাজ্য৷ দিল্লির নির্ভয়া কাণ্ডের মতো আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে দেশের অন্যান্য প্রান্তেও। দোষীদের চরম শান্তির দাবিতে শুরু হয় আন্দোলন।
প্রাথমিক ভাবে কামদুনি গণধর্ষণ মামলার তদন্ত শুরু করে রাজ্য পুলিশ৷ পরে ঘটনার তদন্ত ভার নেয় সিআইডি। চার্জশিটে মোট ন’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। বিচারপ্রক্রিয়া চলার মাঝেই মৃত্যু হয় গোপাল নস্কর নামে এক অভিযুক্তের৷ ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি ব্যাঙ্কশাল কোর্টের বিচারক সঞ্চিতা সরকার ছয় অপরাধীর শাস্তি ঘোষণা করেন। এদের মধ্যে সইফুল আলি মোল্লা, আনসার আলি এবং আমিন আলিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। বাকি তিন অপরাধী শেখ ইমানুল ইসলাম, আমিনুল ইসলাম এবং ভোলানাথ নস্করকে আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। তবে উপযুক্ত প্রমাণের অভাবে ছাড়া পেয়ে যায় বাকি দুই অভিযুক্ত রফিক গাজি এবং নুর আলি। এদিকে, এই ঘটনায় অপরাধীদের সাজা মকুবের জন্য কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন জানানো হয়। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চে ওঠে মামলাটি৷ অবশেষে এল রায়৷