কলকাতা: এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের ব্যবহার এখন ঘরে ঘরে। বাড়ির রান্নাঘর হোক বা রেস্তোরাঁ, রান্নার কাজে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার সর্বত্রই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। প্রায়শই গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে দুর্ঘটনার খবর শোনা যায়। কিন্তু অনেক গ্রাহক জানেন না, সিলিন্ডার ফেটে দুর্ঘটনা ঘটলে গ্রাহক সর্বোচ্চ ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পেতে পারেন। তাই প্রত্যেক গ্রাহকেরই জেনে রাখা দরকার, তারা কোন বিমার সুবিধা পাবেন। এর জন্য কী করতে হবে…
ইন্ডিয়ান অয়েল, হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়াম, ভারত পেট্রোলিয়ামের মতো সংস্থাগুলি OMC-র মাধ্যমে সিলিন্ডার দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ করে। এর জন্য, যখন কোনও গ্রাহক সিলিন্ডারের জন্য রেজিস্টার করবেন, তখনই বিমা করে নেওয়া দরকার। বিমা করানো থাকলে সিলিন্ডার ফেটে দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিপূরণ দেয় সংস্থা। সর্বোচ্চ ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়া যেতে পারে।
এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার যেহেতু দাহ্য পদার্থ এবং সঠিক সাবধানতা অবলম্বন না করলে তা বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে। তাতে মানুষের প্রাণহানিও হতে পারে। এই প্রাণহানি এবং ক্ষয়ক্ষতি, আহত হলে তাঁর ক্ষতিপূরণ বাবদ এলপিজি সরবরাহকারী সংস্থার কাছে যে কোনও গ্রাহক এই বিমা দাবি করতে পারেন। এই বিমার জন্য পেট্রোলিয়াম সংস্থাগুলির বিমা সংস্থাগুলির সঙ্গে পার্টনারশিপ থাকে।
ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম এবং হিন্দুস্তান পেট্রোলিয়ামের ওয়েবসাইটে গেলেই যে কোনও গ্রাহক দেখতে পাবেন ‘Public Liability Insurance Policy’। এই পলিসি টার্মের মধ্যেই পাওয়া যাবে সমস্ত বিমা সংক্রান্ত বিস্তৃত তথ্য। এই টার্ম পেপার অনুসারে নিম্নলিখিত জায়গায় সিলিন্ডার ফেটে দুর্ঘটনা ঘটলে ৭৫ লক্ষ পর্যন্ত বিমার দাবি করতে পারেন গ্রাহক। কোন ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে?
দুর্ঘটনায় কোনও ব্যক্তির মৃত্যু হলে বা কোনও ব্যক্তি গুরুতর আহত হলে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন। এলপিজি গ্যাস লিকেজের জন্য দুর্ঘটনায় সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হলে দাবি জানানো যায়। এক্ষেত্রে গ্রাহককে অবশ্যই বিমা সংস্থার সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে। রেজিস্টার্ড গ্রাহকের বাড়িতে সিলিন্ডার দুর্ঘটনায় ক্ষতি হলে প্রতি ঘটনায় ২ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায়। ব্যক্তিগত দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলে প্রতি ব্যক্তির জন্য প্রতি ঘটনায় ৬ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ মেলে। ঘটনা পিছু ৩০ লক্ষ টাকার চিকিৎসা খরচ পাওয়া যায়। ব্যক্তি পিছু সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা এবং তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য ২৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। গ্যাস দুর্ঘটনায় আহত গ্রাহক ১২ মাসের মধ্যে মারা গেলে বিমার পুরো টাকাই গ্রাহক পাওয়া যাবে। ১২ মাসের মধ্যে কোনও অঙ্গ সম্পূর্ণ নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলেও পুরো টাকা পাবেন গ্রাহক।
তবে অবশ্যই কিছু শর্ত রয়েছে। যেমন, সিলিন্ডারের মেয়াদ ফুরিয়ে থাকলে তাঁর জন্য বিমা পাওয়া যাবে না। এক্ষেত্রে বাড়িতে সিলিন্ডার নেওয়ার সময় এক্সপায়ারি ডেট চেক করে নিতে হবে।
বিমা দাবি করার জন্য রয়েছে কয়েকটি নিয়ম। যেমন, দুর্ঘটনার ৩০ দিনের মধ্যে গ্রাহককে নিজের ডিস্ট্রিবিউটর ও নিকটবর্তী থানায় বিষয়টি জানাতে হবে। একটি এফআইআর-এর কপিও রাখতে হবে সঙ্গে। মৃত্যুর ক্ষেত্রে এফআইআর-এর কপি, মেডিকেল বিল, হাসপাতালের বিল, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং ডেথ সার্টিফিকেটও প্রয়োজনীয়। এর পরেই গ্রাহকরা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির থেকে ক্ষতিপূরণ পাবেন।