১১০ কিমি বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া, কোথায় আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং? জানাল মৌসম ভবন

১১০ কিমি বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া, কোথায় আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং? জানাল মৌসম ভবন

কলকাতা: আলোর উৎসবে দুর্যোগের কালো মেঘ৷ সাগরে তৈরি হয়েছে নিম্নচাপ৷ যা ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিয়ে আছড়ে পড়বে উপকূলে৷ তবে তা ভারতে নয়, আঘাত হানবে পড়শি বাংলাদেশে৷ মঙ্গলবারই বাংলাদেশের উপকূলে আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। একাধিক মডেলে সেই ইঙ্গিত মিলেছে বলেই জানাল ভারতীয় মৌসম ভবন। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ঘণ্টায় ১১০ কিলোমিটার বেগে বইবে ঝোড়ো হাওয়া৷ মূলত বাংলাদেশে আছড়ে পড়লেও সিত্রাং-এর ঝাপটা লাগবে পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশার গায়েও৷  এই দুই রাজ্যেও পড়বে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব৷

আরও পড়ুন- দাবিতে অনড় চাকরিপ্রার্থীরা, থানায় গেলেও আবার অনশনে বসার অঙ্গীকার

কোথায় হবে এই ঘূর্ণিঝড়ের ল্যান্ডফল? এ প্রসঙ্গে ভারতীয় মৌসম ভবনের ঘূর্ণিঝড় নজরদারি বিভাগের প্রধান আনন্দকুমার দাস বলেন, ‘বিভিন্ন মডেল থেকে যে ইঙ্গিত মিলছে, তাতে বাংলাদেশ উপকূলেই ল্যান্ডফল হবে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর। তবে পশ্চিমবঙ্গও এর প্রভাব থেকে রক্ষা পাবে না। মূলত দুই ২৪ পরগনায় পড়বে ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব। তিনি আরও জানিয়েছেন, ‘দীপাবলি অর্থাৎ ২৪ অক্টোবর থেকে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়া বইবে ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলিতে। স্থানীয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে আগাম সতর্ক করা হয়েছে৷ 

আনন্দকুমার দাস আরও জানিয়েছেন, গত ২০ বছরের আবহাওয়া পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে প্রাক-বর্ষার আগে যে ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে, তার চেয়ে বর্ষা-পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ের দাপট অনেক বেশি পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে ‘সিত্রাং’ ততটা মারাত্মক হবে না বলেই আশ্বাস তাঁর৷ তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘বঙ্গোপসাগরের সে অংশে সিত্রাং তৈরি হচ্ছে, সেখানে সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরিভাগের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে বেশি থাকলেও সেখাবে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে জল ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে। তাই শক্তি বাড়িয়ে সিত্রাং-এর অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে৷

ভারতের মৌসম ভবনের জানাচ্ছে,  বৃহস্পতিবার যে জায়গায় ছিল, শুক্রবার সকালে ঠিক সেই অঞ্চলেই অবস্থান করছে নিম্নচাপ। এটি আগামী কয়েক ঘণ্টায় আরও পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে এবং শনিবার সকালে দক্ষিণ-পূর্ব ও সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে৷ সেখান থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে হতে আরও শক্তি বাড়াবে৷ রবিবার সকালে পূর্ব-মধ্য ও সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরের উপরে সেটি অতি গভীর নিম্নচাপের পরিণত হবে৷   

এর পর সম্ভবত অতি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়ে উত্তর দিকে বাঁক নেবে৷ কালীপুজোর সকালে পশ্চিম-মধ্য ও সংলগ্ন পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরের উপর তা ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর সেটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হয়ে মঙ্গলবার সকালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে৷ 

মৌসম ভবন আরও জানাচ্ছে, মঙ্গলবার বিকেলে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবেই অবস্থান করবে ‘সিত্রাং’। সেইসময় হাওয়ার গতিবেগ ৯০ থেকে ১০০ কিমি থাকতে পারে৷ দমকা হাওয়ার বেগ ১১০ কিমিতেও পৌঁছতে পারে৷ বুধবার ভোর সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত এটি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে অবস্থান করবে। তবে ঝড়ের বেগ অনেকটাই কমে যাবে৷ 

এর প্রভাবে ওডিশার পাশাপাশি বৃষ্টি হবে বাংলাতেও৷ সোম ও মঙ্গল একাধিক জায়গায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে৷ সঙ্গে বইবে ঝোড়ো হাওয়া৷