cash
অযোধ্যা: পকেটে কানাকড়ি নেই! অথচ ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে চাইছেন? তা কী করে সম্ভব? ভাবছেন নিশ্চয়ই… এবারা এমন এক বাঙ্কের কথা জানাবো আপনাদের যেখানে অ্যাকাউন্ট খুলতে লাগে না এক টাকাও। এই দেশেই রয়েছে সেই ব্যাঙ্ক।
রাম জন্মভূমিতে গেলেই সন্ধান মিলবে এমন ব্যাঙ্কের। নাম, ইন্টারন্যাশনাল শ্রীরাম সীতা ব্যাঙ্ক। মনে ভক্তি থাকলেই এই ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা যাবে। রিটার্ন পাবেন মানসিক শান্তি। এমন আজব ব্যাঙ্ক রাতারাতি নজর কেড়েছে পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের।
১৯৭০ সালে রামজন্মভূমি তীর্থক্ষেত্র ট্রাস্টের প্রধান, মহন্ত নৃত্যগোপাল দাস ইন্টারন্যাশনাল শ্রীরাম সীতা ব্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। যে ব্যাঙ্কের গ্রাহক সংখ্যা এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩৫ হাজার। মজার বিষয় হল, এই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুললে টাকাপয়সা জমা রাখার কোনও নিয়ম নেই। বদলে রাখতে হবে এক ধরনের ‘বুকলেট’ যার পাতায় পাতায় ‘সীতারাম’ লেখা থাকবে। দেশের পাশাপাশি আমেরিকা, ব্রিটেন, কানাডা, নেপাল, ফিজি, সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর গ্রাহকদেরও অ্যাকাউন্ট রয়েছে এই ব্যাঙ্কে। হিসেব বলছে, শ্রীরামচন্দ্রের ভক্তদের থেকে ২০ হাজার কোটিরও বেশি ‘সীতারাম’ লেখা বুকলেট সংগ্রহ করে ফেলেছে এই ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কের ম্যানেজার পুনিত রাম দাস মহারাজের কথায়,- ‘রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রত্যেক দিন এই ব্যাঙ্কে গ্রাহক সংখ্যা একটু একটু করে বাড়ছে।
ইন্টারন্যাশনাল শ্রীরাম সীতা ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলতে হলে ৫ লাখ বার সীতারাম লিখতে হয়। যার জন্য, বিনামূল্যে ভক্তদের বুকলেট এবং লালকালির পেন দেওয়া হয়। ৫ লাখ বার সীতারামের নাম লিখলে তবে পাসবুক ইস্যু করা হয়। ভারত ও বিদেশ মিলিয়ে ‘ইন্টারন্যাশনাল শ্রী রাম সীতা ব্যাঙ্ক’-র ১৩৬টি শাখা রয়েছে। গ্রাহকদের অনেকে মেল করেও বুকলেট পাঠিয়ে দেন। মনে প্রশ্ন আসতেই পারে, কী লাভ এই ব্যাঙ্কে অ্যাকাউণ্ট খুলে?
পুনিত রাম দাস মহারাজের কথায়, বিশ্বাস ও মানসিক শান্তির জন্য সকলে মন্দিরে যান। ঠিক সেভাবেই সীতারাম লিখে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রেখে দেওয়া প্রার্থনার একটি ধরন। অনেকের বিশ্বাস ৮৪ লাখ বার সীতারাম নাম লিখলে মোক্ষলাভ সম্ভব। রিটার্নে সেই মানসিক শান্তি পেতেই এই ব্যাঙ্কে অ্যাকাঊন্ট খোলার এমন হিড়িক।
বিভিন্ন দেশে এই ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট। তাই নানা ভাষায় সীতারাম নাম লেখা খাতা জমা পড়ে সীতারাম ব্যাঙ্কে। আরবি, উর্দু ভাষায় লেখা খাতাও রয়েছে। এমনকি, কেউ যদি নিজে হাতে ওই নাম না লিখতে পারেন, তবে তাঁর জন্য রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। অর্থের বিনিময়ে ইচ্ছুক ব্যক্তি নিজের নামে সীতারাম লেখা খাতা ছাপাতে পারেন এই ব্যাঙ্কে। রাম মন্দিরের উদ্বোধনের পর এই খাতা জমা পড়ার সংখ্যা অনেক বেড়েছে। বেড়েছে ইচ্ছুক গ্রাহকদের আনাগোনাও।