কলকাতা: রাজস্থান, ওড়িশা, কর্নাটকের মত পশ্চিমবঙ্গেও উৎসব মরসুমে নিষিদ্ধ হয়েছে বাজি কেনাবেচা। মূলত, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, চলতি মাসে অর্থাৎ কালী পুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো, ছট পুজো এবং কার্তিক পুজোয় কোনও প্রকার বাজি ব্যবহার করা যাবে না। হাইকোর্টের এই নির্দেশে একেবারেই খুশি হয়নি বাংলার বাজি সংগঠন। এবার তারা সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার পথে।
সারা বাংলা আতশবাজি উন্নয়ন সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কলকাতা হাইকোর্ট আতশবাজি প্রসঙ্গে যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে তারা খুশি হতে পারেননি। এই কারণে তারা সুপ্রিম কোর্ট যাওয়ার কথা চিন্তা ভাবনা করেছেন। এই প্রেক্ষিতে তারা নিজেদের আইনজীবীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং তাদের পিটিশন তৈরি। সংগঠনের তরফে জানানো হয়েছে, নেশনাল গ্রীন ট্রিবুনালের নির্দেশের জন্য তারা অপেক্ষা করবেন না, কারণ ততদিনে অনেকটা সময় চলে যাবে। বরং তারা সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করবেন যাতে কালীপুজো এবং দীপাবলি উপলক্ষে কমপক্ষে দু’ঘন্টার জন্য বাজি পোড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, এর আগে রাজ্য সরকার কালী পুজো এবং দীপাবলি উপলক্ষে ২ ঘন্টার জন্য বাজি পোড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই অন্যান্য রাজ্যের মত পশ্চিমবঙ্গে বাজিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। এতেই বড়োসড়ো ক্ষতি হতে পারে বাজি প্রস্তুতকারক সংস্থা এবং ব্যবসায়ীদের। অনুমান করা হয়েছে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে ৭৫ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত ব্যবসায় ক্ষতি হবে। অংকের বিচারে তা প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা।
বাঙালির সর্বশ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজায় মণ্ডপে ঢুকতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই করোনাভাইরাস পরিস্থিতির জন্যই বাজি কেনাবেচায় এবং কালীপুজো, জগদ্ধাত্রী পুজো এবং কার্তিক পুজোয় মণ্ডপে ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, উৎসব মরসুমে বাজি পোড়ানোর ফলে বায়ু আরো বেশি দূষিত হয়। এই কারণে এ বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণ আরো বাড়তে পারে। কারণ অনেকেরই এই সময়ে বায়ু দূষণের মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়, তাই বাজি পোড়ানোর ফলে ভাইরাস পরিস্থিতি আরও বিগড়ে যেতে পারে। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখেই এবছর বাজি কেনাবেচায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে একাধিক রাজ্যে।