cpm
নিজস্ব প্রতিনিধি: তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বয়স ৩৬। অন্যদিকে সিপিএমের যুবনেত্রী মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের বয়স ৩৯ বছর। অর্থাৎ দুজনেই একই প্রজন্মের। তবে কি সেই সূত্রে অভিষেকের পাল্টা মুখ হিসেবে মীনাক্ষীকে তুলে ধরতে চাইছে সিপিএম তথা বামেরা? এই চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে।
দলের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে বাম যুবনেত্রীর। তাঁর সাদামাটা জীবন যাপন, অত্যন্ত সাধারণ ভাষায় বক্তব্য রাখা রাজ্যবাসীর মনকে ছুঁয়ে যাচ্ছে। রাজ্যের একটা বড় অংশের মানুষ বেশ কিছুদিন ধরেই পাশের বাড়ির মেয়ে হিসেবে তাঁকে দেখতে শুরু করেছেন। নেতা নন, তিনি যেন আমাদেরই লোক, এই ইমেজ তৈরি করতে পেরেছেন এই ফায়ার ব্র্যান্ড যুবনেত্রী। তাই এই প্রজন্মের সামনের সারিতে থাকা নেতা হিসেবে শাসক দলের অভিষেকের পাল্টা মীনাক্ষীকে তুলে ধরতে চাইছে বামেরা, এমনটাই মনে করে রাজনৈতিক মহল। এ ব্যাপারে বামেরা সাড়াও পেতে শুরু করেছে। যা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে ব্রিগেড সমাবেশে।
যতই সংগঠন থাকুক, সামনে উপযুক্ত মুখ না থাকলে যে নির্বাচনে সাফল্য আসে না সেটা হাড়ে হাড়ে বুঝতে পারছে সিপিএম। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য অসুস্থ হওয়ার কারণে বহুদিন ধরেই রাজনীতির ময়দানে নেই। জ্যোতি বসুর প্রয়াণের আগে থেকেই বুদ্ধদেব সিপিএমের প্রধান মুখ হয়ে উঠেছিলেন। তবে সিঙ্গুর, নন্দীগ্রাম ঘটনার পর বুদ্ধদেব দলকে আর সাফল্য এনে দিতে পারেননি। এরপর ক্রমশ পিছিয়ে যেতে শুরু করেছে সিপিএম। আর গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে শূন্য হয়ে যাওয়ার পর সিপিএমের মনোবল যখন তলানিতে এসে ঠেকেছে, তখন মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়, সৃজন ভট্টাচার্যের মতো লড়াকু নেতা-নেত্রীদের হাত ধরে নতুন করে রাজ্য রাজনীতিতে দাঁড়াতে চাইছে সিপিএম তথা বামেরা। কিন্তু একা রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম আর দলকে কত টানবেন? প্রাক্তন রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের মুখ থেকে আগ্রাসী বক্তৃতা শুনতে অভ্যস্ত নন রাজ্যবাসী। তাই এভাবে রাজ্য রাজনীতিতে বহুদিন তাঁকে দেখা যাচ্ছে না অগ্রাসী ভূমিকায়। এই পরিস্থিতিতে সিপিএমের অন্দরে অক্সিজেন জুগিয়েছেন মীনাক্ষী। তাই অভিষেকের পাল্টা হিসেবে মূলত তাঁকে থেকে সামনে রেখে আন্দোলন করে চলেছে সিপিএম। তাতে ভালই সাড়া পাওয়া যাচ্ছে বলে রাজনীতির কারবারিরা মনে করেন। সিপিএমে হারানো গৌরব মীনাক্ষীরা কতটা পুনরুদ্ধার করতে পারেন এখন সেটাই দেখার।