কলকাতা: ‘টুম্পা সোনা’। পাড়ার মোড়ে সরস্বতী পুজোর প্যান্ডেল হোক কিংবা বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান, বাংলার তরুণ প্রজন্ম আপাতত মেতে আছে এই একটাই গানে। আর এই গানকেই একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে সিপিএমের ‘মাস্টারস্ট্রোক’ বলে মনে করছেন কেউ কেউ। ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্রিগেডের প্রচারে এই ‘টুম্পা’ গানেরই প্যারোডি নির্মাণ করেছে সিপিএম। নানা মহলে প্রশংসা কুড়োলেও চটুল ‘টুম্পা’র সংস্কৃতি নিয়ে কিন্তু দ্বিধাবিভক্ত বাম দলের অন্দরমহল।
‘টুম্পা সোনা’ গানটি আদতেই চটুল সংস্কৃতির ইঙ্গিত বহন করে। মূল গানের কথা, সুর থেকে শুরু করে অন্তর্নিহিত ব্যঞ্জনা, সবটাই পুরাতনপন্থী গুরুজনদের আদর্শ বিরোধী। এ গান নিয়ে তাই তুমুল মতানৈক্য শুরু হয়েছে সিপিএমেরই অন্দরে। দলের একাধিক শীর্ষ ও প্রবীন নেতারাই মনে করছেন বাম সংস্কৃতির পরিপন্থী এই টুম্পা প্যারোডি ব্রিগেডের প্রচারে ব্যবহার করা উচিত হয়নি। এতে দলীয় আদর্শবাদী ভাবমূর্তিতে কালি লাগতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
বস্তুত, তরুণ প্রজন্মের মাঝে ‘টুম্পা সোনা’ গানের জনপ্রিয়তার কথা মাথায় রেখেই ব্রিগেড প্রচারে প্যারোডি নির্মাণের জন্য এই গানকে বেছে নিয়েছিল সিপিএম। গানটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কিন্তু একদিকে যখন সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র এই গানের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন, অন্যদিকে তখন এই ভিডিওতেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বাঁকুড়া এবং উত্তর 24 পরগনার সিপিআইএম নেতারা। তাঁদের মতে, দলের আদর্শে কালি না লাগিয়ে অন্যভাবেও প্রচার করা যেত ব্রিগেড সমাবেশ।
‘টুম্পা সোনা’র মূল গানে কথায় যে লঘুচালের ইঙ্গিত রয়েছে, প্যারোডিতে অবশ্য তেমনটা রাখা হয়নি। মিনিট কয়েকের ভিডিওর পুরোটা জুড়েই রয়েছে বিজেপি আর তৃণমূলকে আক্রমণ। বলা বাহুল্য, তরুণ প্রজন্মকে ব্রিগেড যাত্রায় উৎসাহিত করতেই এই গান তৈরি করেছে সিপিএম। কিন্তু পুরাতনপন্থীদের বিরোধিতায় দলের অন্দরেই দেখা যাচ্ছে মতবিরোধ। এমতাবস্থায় নবীন না প্রবীণ, কোন মহলকে গুরুত্ব দেবে দল? উত্তর দেবে সময়।