নয়াদিল্লি: কথা মতো চলতি মাস থেকেই শুরু হতে চলেছে করোনা ভাইরাসের টিকাকরণ প্রক্রিয়া৷ সেই অনুযায়ী রাজ্যজুড়ে তার প্রস্তুতিও চলছে৷ বৃহস্পতিবারের কলকাতা-সহ জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে টিকার মহড়া৷ এবার টিকাকরণের দিনক্ষণ ঘোষণা করল কেন্দ্র৷ দেশজুড়ে টিকাকরণের খবরে নিঃসন্দেহে অতিমারীক্লিষ্ট শহরের জন্য বয়ে এনেছে স্বস্তির বাতাস৷
জানা গিয়েছে, আগামী ১৬ জানুয়ারি গোটা ভারতজুড়ে শুরু হবে করোনা টিকাকরণ৷ আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে একটি বৈঠকে টিকাকরণের দিনক্ষণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ সিদ্ধান্ত হয়েছে, প্রথম ভ্যাকসিন পাবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ দ্বিতীয় পর্বে স্বাস্থ্যকর্মীদের পর টিকা পাবেন প্রথম সারির করোনা যোদ্ধারা৷ এরপর টিকা দেওয়া হবে পঞ্চাশোর্ধ ব্যক্তিদের৷ এরপর ধাপে ধাপে ৫০ বছরের নিচে থাকা কোমোর্বিটিস বা অন্য রোগ রয়েছে এমন ব্যক্তিদের টিকা দেওয়া হবে৷ প্রথম পর্যায়ে ৩ কোটি ও দ্বিতীয় পর্বে ২৭ কোটি টিকা দেওয়া হবে৷
কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল, আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে দেশে করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু হবে৷ তার আগে আগামী সোমবার দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর৷ সারাদেশে কীভাবে ভ্যাকসিন পৌঁছে দেওয়া যাবে জনসাধারণের কাছে, সেই সংক্রান্ত ব্যাপারে এই বৈঠকে আলোচনা হতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন ড্রাই রান সাফল্যের সঙ্গেই এগিয়েছে দেশে। এর আগে গত শনিবার রাজ্যের তিন জায়গায় ড্রাই রান হয়েছে।পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের অন্যান্য সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মিলিয়ে ৭৩৬টা জেলায় হয়েছে করোনা ভ্যাকসিনের ড্রাই রান। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই দেশবাসীকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু করে দিতে পারবে কেন্দ্রীয় সরকার। এই প্রেক্ষিতে আগামী সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেশের সব মুখ্যমন্ত্রীদের বৈঠক হওয়ার কথা। জনসাধারণের কাছে কিভাবে করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন দ্রুত পৌঁছে দেওয়া যায় সেই সংক্রান্ত ব্যাপারে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার আগেই জানিয়েছিল, প্রাথমিক পর্যায়ে ৩০ কোটি মানুষকে ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে।
প্রাথমিক পর্যায়ে যে ৩০ কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া হবে তাদের মূলত চারটি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমে রয়েছেন ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আশা কর্মীরা। দ্বিতীয় পর্যায়ে রয়েছেন পুলিশ, পৌরসভার কর্মীরা। তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে এমন মানুষ যাদের বয়স ৫০ বছরের বেশি। আর চতুর্থ পর্যায় রয়েছেন কোমর্বিডিটি রোগীরা, তাদের বয়স ৫০ বছরের কম বা বেশি হতে পারে। একই সঙ্গে এমন মানুষকেও ভ্যাকসিন দেওয়া হবে যাদের কাজের সূত্রে সর্বক্ষণ মেলামেশা করতে হয়। এইচআর পর্যায় মিলিয়ে মোট ৩০ কোটি মানুষকে প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এই ভ্যাকসিন প্রদানের খরচ সম্পন্ন বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। তারপরে দেশজুড়ে ভ্যাকসিন বিতরনের জন্য হাব তৈরি করা হবে। শেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের ২৯ হাজারের বেশি জায়গায় শিবির তৈরি করা হবে যেখান থেকে টিকাকরণ প্রদান করা হবে। টিকা বিতরনের জন্য কমপক্ষে ৩১ টি হাব তৈরি হবে বলে জানা গিয়েছে।