মারিল্যান্ড: করোনা ভাইরাসের যে বিশ্বজোড়া অতিমারী গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ধ্বংসলীলা চালিয়েছে, তাতে মানুষের দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক ছন্দটাই গিয়েছে এলোমেলো হয়ে। অকাল অপ্রত্যাশিত নিষ্ঠুর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। আর এই করোনা অতিমারীতে গোটা পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে দেশ, তার নাম আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন মুলুকে করোনা সংক্রমণের জেরে যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে তা ছাড়িয়ে গেছে সর্বকালীন রেকর্ড। অতীতে তিন তিনটি বড়সড় যুদ্বের সাক্ষী থেকেছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্র। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সর্বগ্রাসী ধ্বংসের পাশাপাশি কোরিয়া এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধেও প্রাণ হারিয়েছিলেন বহু আমেরিকাবাসী। কিন্তু ২০২০ সালের করোনা ভাইরাসে মৃত্যুর হার যুদ্বের পরিসংখ্যানকেও হার মানিয়েছে। জানা গেছে, করোনায় আক্রান্ত হয়েছে মার্কিন মুলুকে প্রাণ গেছে প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের, যা দেশের ইতিহাসে রেকর্ড।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মতো ভয়াবহ মৃত্যুযজ্ঞে বাকিদের মতোই আমেরিকাবাসী জনগণও বিপর্যস্ত হয়েছিলেন। বিজয়ী শক্তিজোটের সঙ্গে থাকলেও ১৯৩৯ থেকে ১৯৪৫ সকল পর্যন্ত আমেরিকায় যুদ্বের প্রভাবে প্রাণ হারিয়েছিলেন প্রায় ৪০৫০০০ জন। এরপর ভিয়েতনাম এবং কোরিয়া যুদ্ধে যথাক্রমে ৫৮০০০ এবং ৩৬০০০ প্রাণ বলি হয়েছিল। কিন্তু এবার আর যুদ্ধ নয়, শুধুমাত্র এক ভাইরাস ভেঙে দিয়েছে সমস্ত মৃত্যুর রেকর্ড।
সোমবার আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন করোনার কোপে মৃত সমস্ত দেশবাসীর স্মৃতির উদ্দেশ্যে পালন করেন নীরবতা। হোয়াইট হাউসে মোমবাতিও জ্বালানো হয়। এছাড়া মৃতদের সম্মান জ্ঞাপনের জন্য আগামী ৫ দিন আমেরিকার ফেডেরাল বিল্ডিংয়ে জাতীয় পতাকা নীচু করে রাখার সিদ্ধান্তও ঘোষণা করেছেন তিনি। দেশের উদ্দেশ্যে প্রেসিডেন্টের বার্তা, “আমাদের দুঃখে শোকে পাথর হয়ে গেলে চলবে না। শোককে অতিক্রম করতেই হবে।”