কলকাতা: রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে একদিকে বিরোধী দলগুলির ক্রমাগত আক্রমণ, অন্যদিকে দলবদলের হিরিক, দুইয়ের মাঝে পড়ে রীতিমতো বিপর্যস্ত মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিচালিত তৃণমূল কংগ্রেস। তবে শাসকদল যে ক্ষমতা ধরে রাখতে মরিয়া, তা দলনেত্রীর একাধিক প্রাক-নির্বাচনী পদক্ষেপেই প্রমাণিত হচ্ছে। ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কখনো ঘোষণা করেছেন ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প, কখনো বা মানুষের কাছে বিনামূল্যে চিকিৎসার পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছেন ‘স্বাস্থ্য সাথী’র কার্ডের মাধ্যমে। কিন্তু তড়িঘড়ি এই সমস্ত সিদ্ধান্তে বিভ্রান্তিও রয়েছে অনেক।
‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আওতায় রাজ্যের প্রতিটি মানুষ সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত চিকিৎসার পরিষেবা পাবেন, এমনটাই জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এই প্রকল্পে হাসপাতাল গুলির চিকিৎসার খরচ কত হবে? একেবারে নিখরচায় কি পরিষেবা দেওয়া সম্ভব? উঠেছিল একাধিক প্রশ্ন। মূলত সেই সমস্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার জন্যেই কিছু হাসপাতালের তরফ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন জানানো হয়েছিল। সূত্রের খবর, এদিন তার ভিত্তিতে মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের আওতায় বিনামূল্যে পরিষেবা দিতে গিয়ে হাসপাতাল গুলির কী পরিমাণ খরচ হচ্ছে, তার পর্যালোচনা করবে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন কমিটি। বস্তুত, চলতি মাস থেকে স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের ব্যবহার শুরু হয়ে যাওয়ার পর থেকেই রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে উঠে এসেছে একাধিক অভিযোগ। কোথাও কার্ড থাকা সত্ত্বেও রোগীর পরিবারকে করতে হয়েছে বাড়তি খরচ, কোথাও বা ফিরে যেতে হয়েছে খালি হাতেই। মূলত রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধেই এ ব্যাপারে অভিযোগের আঙুল উঠেছে।
কিন্তু সরকারি বেসরকারি প্রতিটি হাসপাতালের উদ্দেশ্যেই নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরের কড়া নির্দেশ ছিল, “স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলে কাউকে ফেরানো যাবে না। বাধ্যতামূলক ভাবে দিতে হবে চিকিৎসা পরিষেবা।” এ বিষয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ও। রাজ্যের প্রতিটি সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালই এই নতুন প্রকল্পের আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছেন তিনি। তার জন্য যত খরচ হবে, তা যাতে বরাদ্দ করা হয়, সে বিষয়ে মন্ত্রীসভায় নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।