স্বেচ্ছায় করোনা আক্রান্ত হতে চান? মিলবে নগদ ৩২৫৫০৪ টাকা

মানুষ গিনিপিগদের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে করোনা ভাইরাসের জীবাণু ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের দুটি ধরন 0C43 এবং 229E দেওয়া হবে। যারা বর্তমান কোভিড-১৯ এর থেকে কিছুটা আলাদা ধরনের এবং এতটাও ভয়ঙ্কর নয়। এই দুটি ভাইরাসের সংক্রমণে মাঝারি ধরনের শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয় মানুষ।

ওয়াশিংটন: বিশ্ববাসী যখন মারণ করোনা সংক্রমণের হাত থেকে সুরক্ষিত থাকার উপায় খুঁজতে ব্যাস্ত, তখন স্বেচ্ছায় করোনা আক্রান্ত হতে ফ্লু ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার কথাও শোনা যাচ্ছে। আর আপনার স্বেচ্ছায় অসুস্থ হয়ে ওঠার  জন্য আপনাকে ৩,৫০০ পাউন্ড অর্থাৎ ভারতীয় টাকার হিসেবে যা প্রায় ৩,২৫, ৫০৪.৭৩ টাকা ক্ষতিপূরণ বা সম্মানিক হিসেবে দেওয়া হবে। এটা অত্যন্ত নিম্নমানের ব্যাঙ্গ বলে মনে হতেই পারে, অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে।

তবে মারণ করোনার প্রতিষেধক খুঁজে পেতে বাস্তবে এমনই ঝুঁকিপূর্ণ উদ্যোগ নিয়েছে লন্ডনের চিকিৎসা গবেষণা এবং উন্নয়ন সংস্থা এইচভিভো এইধরণেরই । যা শুধুমাত্র গবেষণার স্বার্থে। বলা যায় একরকম নিরূপায় হয়েই। কারণ প্রতিদিন এই ভাইরাস যে হারে বিস্তার লাভ করছে তা ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলছে বিশ্বজুড়ে। টানা তিনমাস ধরে এই রোগের গতিপ্রকৃতি প্রতক্ষ্য করার পর, এই প্রথম বার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনা সংক্রমণকে 'বিশ্ব মহামারী' ঘোষণা করতে বাধ্য হল। শুধুমাত্র সতর্কতামূলক পদক্ষেপ আর পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ওষুধের প্রয়োগ ছাড়া যে সংক্রমণ প্রতিরোধ বা নির্মূল করার নির্দিষ্ট কোনো উপায় এখনও অধরা। এদিকে কোভিড-১৯-এর প্রতিষেধক খুঁজে বের করতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে একাধিক দেশ। পশুর শরীরের ওপর ওষুধ প্রয়োগ করে এই প্রতিষেধক বের করাটা অনেক বেশি সময়সাপেক্ষ হতে পারেবলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সুতরাং করোনা ভাইরাস সমূলে উৎপাটন করতে এবং দ্রুততার সঙ্গে এর প্রতিষেধক খুঁজে পেতে আপনিও হতে পারেন এই গবেষণার অঙ্গ।  গবেষণায সংস্থা এইচভিভোর পরিকল্পনা অনুসারে ২৪ জন করে স্বেচ্ছাসেবীর দল গঠন করা হবে। যাদের রাখা হবে লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল এর কুইনমেরি বায়োএন্টারপ্রাইজ ইনোভেশন সেন্টারে। এরপর এই মানুষ গিনিপিগদের শরীরে পরীক্ষামূলকভাবে করোনা ভাইরাসের জীবাণু ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। তবে এক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের দুটি ধরন 0C43 এবং 229E দেওয়া হবে। যারা বর্তমান কোভিড-১৯ এর থেকে কিছুটা আলাদা ধরনের এবং এতটাও ভয়ঙ্কর নয়। এই দুটি ভাইরাসের সংক্রমণে মাঝারি ধরনের শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয় মানুষ।

তবে তার আগে এই ঝুঁকিপূর্ণ গবেষণায় যোগদানকারীদের সপ্তাহ দুয়েক পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।এবং এদের মধ্যে থেকে শুধুমাত্র সুস্থ-সবলদেরকেই গবেষণার জন্য বেছে নেওয়া হবে। যাতে কোনো মুত্যুর ঘটনা না ঘটে।ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করানোর পর তাদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে ওই সেন্টারের অন্য একটি ইউনিটে। অর্থাৎ এই কদিন তাঁদের নিজেদের বাড়ি, পরিবার, পরিজন সমস্ত কিছু থেকে আলাদা করে রাখা হবে। এইসময়ের মধ্যে চিকিৎসকরা প্রতিরক্ষামূলক পোশাক এবং ভেন্টিলেটর সহ ওই স্বেচ্ছাসেবীদের পর্যবেক্ষণ করবেন। নতুন ও বর্তমানে আছে এমন কিছু ভ্যাকসিনের প্রয়োগের পর রোগীদের প্রতিক্রিয়াগুলি বিশ্লেষণ করবেন এবং এই ফলাফলগুলি থেকেই গবেষকরা করোনা নিয়ন্ত্রণের সবচেয়ে কার্যকর চিকিৎসার দিশা খুঁজে পাবেন। যা চিকিৎসকদেরও কাছে দ্রুত চিকিৎসার পথপ্রদর্শক হবে।

টাইমস অফ লন্ডনে-এ প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুসারে, এই মুহূর্তে করোনার ভ্যাকসিন তৈরীর প্রতিযোগিতায় নিযুক্ত ২০টি ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের তালিকায় আছে লন্ডনের এই এইচভিভো সংস্থাটি। যারা আগামী শীতের আগেই  কভিড-১৯-এর প্রতিরোধে ভ্যাকসিন তৈরীর লক্ষ্যে মাত্রা রাখছে। সবশেষে এটা জানা প্রয়োজন যে কিভাবে এই স্বেচ্ছাসেবীর তালিকায় নিজের নাম নথিভুক্ত করবেন? এর জন্য যাবতীয় তথ্য জানা যাবে FluCamp.com- এই ওয়েবসাইটে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten + 16 =