ওয়াশিংটন:বিশ্বের ত্রাস করোনার গ্রাসে একের পর এক দেশ। আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ সত্ত্বেও কোভিড১৯-কে নিয়ন্ত্রণ করার কার্যত কোনো উপায় এপর্যন্ত অধরা। যদিও যুক্তরাষ্ট্রে পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের শরীরে করোনার ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এপর্যন্ত এই ভাইরাসের সংক্রমণ বা মৃত্যুর ঘটনাযর প্রেক্ষিতে তাপমাত্রা,বয়স, বায়ু দূষণের মত কারণগুলির ওপরেই জোর দেওয়া হয়েছে। তবে এবার এই সংক্রমণের আরও একটি কারণ উল্লেখ করেছেন গবেষকরা। যাদের রক্তের গ্রুপ 'এ' (দ্বিতীয় রক্তের ধরন) তাদের শরীরে করোনা সংক্রমণের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। তুলনায় তাদের রক্তের গ্রুপ 'ও' গ্রুপের (প্রথম রক্তের ধরন) তাদের ক্ষেত্রে এই সম্ভাবনা কম। খবর রুশ সংবাদ সংস্থা তাস সূত্রে৷
চীনের বিজ্ঞানীদের এক গবষেণাপত্র থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে মেডরেক্সিভ ওয়েবসাইটে। গবেষকরা উহান ও শেনজেন হাসপাতালের করোনা আক্রান্ত ২,২০০ রোগীর তথ্যের ভিত্তিতে এই গবেষণা করেছেন। তাঁদের মধ্যে ২০০ জন মৃত। গবেষকদের মতে, উহানের নাগরিকদের মধ্যে ৩৪% 'ও' গ্রুপের (প্রথম রক্তের ধরন) রক্ত বহন করছেন, ৩২% শতাংশের দেহে 'এ' গ্রুপের (দ্বিতীয় রক্তের ধরন) রক্ত, ২৫% শতাংশ 'বি' গ্রুপের (তৃতীয় রক্তের ধরন) এবং ৯% মানুষের দেহে রক্তের গ্রুপ 'এবি' (চতুর্থ রক্তের ধরন)। এই তথ্য অনুসন্ধানে গবেষকরা উহানের তিন হাজার সাতশ সুস্থ নাগরিকের রক্ত পরীক্ষা করেছেন।
পাশাপাশি করোনা আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে উহানে করোনা আক্রান্ত ৩৮% রোগীর শরীরেই 'এ' গ্রুপের রক্ত। সেখানে ২৬.৪% রোগীর 'বি' গ্রুপের রক্ত এবং ২৫.৮% রোগীর শরীরে 'ও' গ্রুপের রক্ত। এক্ষেত্রে সবচেয়ে কম ১০% রোগীর শরীরে 'এবি' গ্রুপের রক্ত বহন করছেন।
সুতরাং তথ্য অনুসারে করোনা সংক্রমণ বেশি হয়েছে 'এ' গ্রুপের রক্ত বহনকারীদের। তুলনায় 'ও' এবং এই গ্রুপের রক্ত তাদের দেওয়া যায় সেই গ্রুপের রক্ত বহনকারীদের সংখ্যা কম। এই তথ্যপ্রমাণ সত্যতা যাচাই করতে উহান ও শেনজেন শহরের ৩৮৯ জন করোনা আক্রান্ত রোগীর রক্ত নিয়ে নতুন করে গবেষণা শুরু করেন গবেষকেরা। এরপরেই তাঁরা এবিষয়ে নিশ্চিত হন যে করোনা আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি রোগীরা 'এ' গ্রুপের রক্ত বহনকারী এবং 'ও' গ্রুপের রক্ত তুলনামূলক কম।
সেক্ষেত্রে এই তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই তাঁরা এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে তাদের রক্তের গ্রুপ 'এ'তাদের করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। গত বছরের শেষের দিকে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে চীনের উহানে। কিন্তু তিনমাসে এপর্যন্ত ১৫৭টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯। আক্রান্তের সংখ্যা এক লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি। সারা বিশ্বের এপর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে অন্তত ৭,১৫৮ জন।