কলকাতা: দেশবাসীর জন্য নয়া সুখবর আনতে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্মন্ত্রক। এবার জটিল রোগ থাকা দেশবাসীর ৫০ বছরের কম হলেও মিলবে করোনা টিকা। লিম্ফোমা, লিউকোমিয়া, মায়লোমার মতো ক্যান্সার, কিডনি, হৃদরোগ, হাইপারটেনশনের সমস্যা সহ একাধিক কঠিন কো-মর্বিড রোগকে তালিকাভুক্ত করে এবার এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের টিকা দেওয়ার উপর উদ্যোগী হচ্ছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে কো-মর্বিড রোগের একটি তালিকা প্রস্তুত করে খুব শীঘ্রই চতুর্থ দফায় এই রোগে আক্রান্তদের টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
সূত্রের খবর, দেশের প্রায় ২৬ কোটি পঞ্চাশোর্ধ্ব নাগরিককে টিকা প্রদানের কাজ শেষ হওয়ার পর আনুমানিক ১ কোটি কো-মর্বিড রোগাক্রান্ত নাগরিককে টিকা দেবে কেন্দ্র। এক্ষেত্রে টিকা নেওয়ার জন্য আবেদন করা যাবে ‘কো উইন’ ডিজিট্যাল অ্যাপের মাধ্যমে, যা খুব শীঘ্রই জনসাধারণের জন্য চালু করা হবে বলেও জানা গেছে। পাশাপাশি এও স্পষ্ট করে হয়েছে, এই পর্যায়ে টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে লাগবে প্রয়োজনীয় ও বৈধ মেডিক্যাল সার্টিফিকেট। কেন্দ্রের এই পর্যায়ের টিকাও বিনামূল্যে দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। এই ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত না হলেও আগামী মার্চ মাসের মধ্যে এই সিদ্ধান্তের উপর কাজ শুরু হতে পারে, এমনটাই জানা গেছে সূত্র মারফৎ।
চতুর্থ পর্যায়ের এই টিকাকরণ শুরু করতে আগে দ্বিতীয় পর্যায়ে কোভিড যোদ্ধাদের টিকাদান সম্পুর্ন করতেও তৎপর হয়েছে কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, এখনো অব্দি মোট ৩৩ লক্ষ মানুষ টিকা পেয়েছেন, কিন্তু আগামী ৬ মার্চের মধ্যে দেশের ২ কোটি নাগরিককে টিকা প্রদান সম্পুর্ন করার কর্মসূচি নিয়েছে কেন্দ্র। এখন এই কর্মসূচি কতটা পরিমানে রূপায়িত হবে সেই নিয়ে যদিও সন্দেহের একটা অবকাশ রয়েই যাচ্ছে। এদিকে অনেক রাজ্যে টিকা না নেওয়ার প্রবণতাকে লক্ষ্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধন বলেছেন, “স্বাস্থ্যকর্মী এবং প্রত্যক্ষ কোভিড যোদ্ধাদের আমি করজোড়ে বলছি, শঙ্কা ছেড়ে টিকা নিন। ভারতে তৈরি দুটি টিকাই (কোভ্যাকসিন এবং কোভিশিল্ড) নিরাপদ এবং করোনার টিকার কারণে এখনও পর্যন্ত দেশে একজনেরও মৃত্যু হয়নি”।
এদিকে দেশে ১ কোটি টিকার ডোজ তৈরির কাজ সম্পুর্ন হয়েছে সম্প্রতি, যা বিশ্বের দরবারে একটি রেকর্ড। আন্তর্জাতিক সূত্রে খবর, ভারত দ্বিতীয় এমন দেশ যা এমন যুদ্ধকালীন তৎপরতায় টিকা প্রস্তুতে সক্ষম হয়েছে। টিকা তৈরির নিরিখে ভারত রয়েছে দ্বিতীয় স্থানে। এর আগে করোনা টিকার ১ কোটি ডোজ ৩১ দিনে তৈরি করেছে আমেরিকা, যেখানে এই পরিমাণ টিকার ডোজ নির্মাণে ভারতের সময় লেগেছে ৩৪ দিন।