ভুবনেশ্বর: শিয়ালবেট গ্রামের পর আরও এলাকার খোঁজ মিলল যেখানকার মানুষকে এখনও করোনা ছুঁতে পারেনি৷ দেশজুড়ে যখন করোনার দাপট চলছে, তখন ঠিক উল্টো ছবি দেখা গেল ওড়িশার একটি গ্রাম করণজারায়। গত বছর করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়া থেকে এখনও পর্যন্ত সেখানকার একজন বাসিন্দাকেও মারণ ভাইরাস ছুঁতে পারেনি। করোনা আবহে এটা যা রেকর্ড।
ওড়িশার গঞ্জাম জেলার খালিকোটা ব্লকের অন্তর্গত করণজারা গ্রামে ২৬১টি পরিবারের বাস৷ সবমিলিয়ে প্রায় বারোশোর বেশি মানুষ সেখানে থাকেন। কিন্তু গত বছর করোনার বাড়বাড়ন্ত হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত এই গ্রাম করোনামুক্ত৷ এমনকি, কারও শরীরে কোনও উপসর্গও দেখা যায়নি। এটা জানার পর জানুয়ারি মাসে এই এলাকার ৩২জনের কোভিড ১৯ পরীক্ষা করা হলেও, তাঁদের সবার রিপোর্টই নেগেটিভ আসে। জানা গিয়েছে, কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ পালন করার ফলেই এই সাফল্য মিলেছে। সম্প্রতি গ্রামটি পরিদর্শনেন যান গঞ্জাম জেলার কালেক্টর বিজয় কুলানগে। স্থানীয় বেশ কয়েকজনের সঙ্গে কথাও বলার পর গ্রামবাসীদের সচেতনতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ কালেক্টর। তিনি বলেন, ওই এলাকার প্রত্যেকেই কোভিড বিধি সম্পর্কে সচেতন। মহিলা, শিশু সহ প্রত্যেকে বাড়ি থেকে মাস্ক পরেই বাইরে বেরচ্ছেন এবং সামাজিক দূরত্ব বিধিও মেনে চলছেন। অপ্রয়োজনীয় ভাবে কেউই বাড়ির বাইরে ঘোরাঘুরি করছেন না৷
করণজারা গ্রাম কমিটির প্রেসিডেন্ট ত্রিনাথ বেহেরা জানান, সংক্রমণ শুরুর সময় থেকেই স্থানীয়দের স্বাস্থ্যবিধির সম্পর্কে সচেতন করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ‘প্রথম থেকেই আমরা গ্রামের বাসিন্দাদের সতর্ক করেছি। প্রশাসনের নির্দেশ অনুযায়ী তাঁদের কোভিড বিধি সম্পর্কে বোঝানো হয়েছে। আশা, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরাও সচেতনতা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।’ গ্রামের বেশ কয়েক যুবক কাজের সূত্রে মুম্বইতে থাকেন। গত একবছর তাঁদের অনেকেই বাড়িতে আসেননি। আর যে কয়েকজন গ্রামে ফিরেছেন, তাঁদের ১৪ দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল। এছাড়া, ভিড় বা জমায়েত এড়ানোর জন্য গত বছরের শুরু থেকে বড় কোনও অনুষ্ঠানও আয়োজন করতে দেওয়া হয়নি৷
সমস্ত বিধি মানার জেরেই করোনা ছুঁতে পারেনি গোটা গ্রামকে। ফলে গোটা দেশের কাছেই মডেল হয়ে উঠেছে করণজারা।