নয়াদিল্লি: গতকাল শেষ আর্জিও খারিজ করেছিল দিল্লি হাইকোর্ট। অবশেষে শুক্রবার ভোরে ফাঁসি হল নির্ভয়া কাণ্ডের ৪ অপরাধীর। সংবাদসূত্রের খবর, ফাঁসি হওয়ার আগে ব্রেকফাস্টে আপত্তি জানিয়েছিল ওই চার জন। এমনকী, পুলিশের সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছে তারা।
নির্ভয়া গণধর্ষণ ও হত্যা মামলায় দোষী অক্ষয় ঠাকুর, পবন গুপ্ত, মুকেশ সিং এবং বিনয় শর্মার ফাঁসি হয়েছে শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টার সময়। প্রায় দু'ঘণ্টা আগে থেকেই তোড়জোড় চলছিল তিহার জেলে। প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন ফাঁসুড়ে পবন জল্লাদও। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, সারা রাতই প্রায় ঘুমায়নি ওই ৪ আসামী। বৃহস্পতিবার রাতেই অপরাধীদের ঘুমাতে যেতে বলেছিল তিহার জেল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সেই কথা শোনেনি তারা। স্নান করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল। অপরাধীরা শোনেনি সেই কথাও। এরপর ফাঁসির আগে ব্রেকফাস্ট দেওয়া হলেও তা খায়নি তারা। এমনকী, যে পুলিশের নজরদারিতে অপরাধীরা ছিল, তাঁর সঙ্গেও খারাপ আচরণ করেছিল তারা। গত ৭ বছরে কয়েদ থাকাকালীনও নিয়ম ভাঙার অভিযোগ উঠেছিল অক্ষয়, পবন, মুকেশ এবং বিনয়ের বিরুদ্ধে। এর জন্য বিনয় ১১ বার, পবন ৮ বার, অক্ষয় ১ বার ও মুকেশ সিং ৩ বার অতিরিক্ত শাস্তি ভোগ করেছে বলেই সংবাদসূত্রে প্রকাশ। সাত বছর পর অবশেষে নির্ধারিত সময়েই ফাঁসি হয়েছে নির্ভয়া কাণ্ডের ৪ দোষীর।
কিউরেটিভ পিটিশনে পবন দাবি করেছিল ২০১২ সালের ১৬ ডিসেম্বর দিল্লির ওই ঘটনার সময় সে নাবালক ছিল। অন্যদিকে রাষ্ট্রপতির কাছে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রাণভিক্ষার আর্জি জানিয়েছে অক্ষয়। এর আগে তার প্রাণভিক্ষার আর্জি খারিজ করেছিল রাষ্ট্রপতি। এছাড়া মুকেশ সিং ওই ঘটনার দিন দিল্লিতেই ছিল না বলেও পিটিশন দিয়েছিল। খারিজ হয়েছে তাও। এর আগে জানুয়ারি মাসে অপরাধীদের ফাঁসির দিন ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু স্থগিতাদেশ পড়েছিল। তারপর ঘোষণা হয়েছিল, ফেব্রুয়ারিতেই ফাঁসি হবে দোষীদের। তাও স্থগিত হয়ে দিন নির্ধারিত হয়েছিল মার্চের ২০ তারিখ। সর্বোচ্চ আদালতের এই রায়কে সম্মান জানিয়ে নির্ভয়ার মা গতকাল জানিয়েছিলেন, 'প্রাণভিক্ষার যা আর্জি করা হয়েছিল, পুরোটাই জোরজবরদস্তি। আদালতের দেওয়া ফাঁসির সিদ্ধান্তকে টলানোর চেষ্টা। কিন্তু আদালতও সেই প্রকৃত সত্য বুঝতে পেরেছে।' তাঁর কথায়, ন্যায়বিচার পেয়েছেন নির্ভয়া। ন্যায় বিচার পেয়েছে দেশবাসী।