নয়াদিল্লি: নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন যাঁরা, সেই মমতা-নীতীশ-তেজস্বী-অখিলেশ নিজেদের প্রধান বিরোধী মুখ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করছেন বার বার। বিরোধীদের মোদী বিরুদ্ধ রাজনীতিতেও যে কথা বলে সেই ক্ষমতাই, তা আরও একবার প্রমাণ হচ্ছে। নীতীশ-মমতা বিরোধী মুখ হিসেবে তাই সামনে এলেও, বিরোধী শিবিরে ক্রমশ লাগাম ধরার জায়গায় কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি। কংগ্রেসের ক্ষেত্রে কারণ হিমাচলের পর কর্ণাটকে বিজেপিকে বিরাট ব্যবধানে রাখতে সফল কংগ্রেস। অন্যদিকে কর্ণাটকের ভোটফলের দিনই জলন্ধর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের ফল ছিল। সেখানেও ২৪ বছর ধরে চলা কংগ্রেসের দাপটকে ভুল প্রমাণ করে ৫৮ হাজারের ভোটের ব্যবধান রেখেছে আম আদমি পার্টি। সুতরাং, কর্ণাটক কংগ্রেসের, আর জলন্ধরে নিজেদের দাপট দেখাতে সফল কেজির আপ। সবমিলিয়ে বিরোধী শিবিরের ছবিটা কিন্তু পাল্টে যাচ্ছে।
কলকাতায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাতের পর সমাজবাদী পার্টি সুপ্রিমো অখিলেশ বলেছিলেন, মোদীর বিরুদ্ধে আঞ্চলিক দলগুলি জোট গড়বে, জাতীয় দল হিসেবে কংগ্রেস কী করবে তিনি তা জানেন না। সেই সময় কংগ্রেসের সঙ্গে মমতা-অখিলেশের স্পষ্ট বিভেদরেখা সামনে আসে। সেই বিভেদ রেখা কিছুটা মেটাতে ময়দানে নামেন নীতীশ-তেজস্বী। যিনি রাহুল গান্ধী, অখিলেশ, মমতা তিন জনের সঙ্গেই বৈঠক করেন। সবমিলিয়ে ক্রমশ বিরোধী জোটের মুখ হয়ে উঠলেন মমতা-নীতীশ-অখিলেশ। মোদী বিরোধী হয়েও রাহুল- কেজরি একটা কূটনৈতিক দূরত্ব বজায় রাখেন।
এবার প্রশ্ন উঠছে, হিমাচলের পর কর্ণাটকে কংগ্রেসে জয়, আম আদমি পার্টির ভোট জয়ের পালা বজায় রাখা, বিরোধী জোটে কংগ্রেস ও আম আদমি পার্টি কতটা চালকের আসনে? বিশ্লেষকদের মত, কংগ্রেস ও আপকে এই পরিস্থিতিতে চালকের আসনে রাখতে বাধ্য নীতীশ-মমতা। শুধু তাই নয়, বিরোধী জোটে কংগ্রেসকে জমি ছাড়ার জায়গাতে নেই আম আদমি পার্টিও। যেখানে রাহুল-কেজরির মধ্যেও কাজিয়া অনেক পুরনো। যেখানে কেজরিওয়ালকেই বলতে শোনা গেছে, কংগ্রেসের ধ্বংসের কারণ হবে একমাত্র রাহুল। এবার সেই রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো যাত্রার পরই কর্ণাটকে কংগ্রেসের জয়। আবার বিরোধিতার ছবি সামনে রেখেই জলন্ধর লোকসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আপের জয়, দুই দলকেই ক্ষমতার নিরিখে সমানে রাখছে। এই পরিস্থিতিতে বিরোধী জোটে দাপট থাকবে দুই দল দুই মুখের। রাহুলের কংগ্রেস, কেজরির আম আদমি পার্টি।