নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাসের মারণ থাবায় বছর খানেকের বেশি সময় ধরে যে শুধু মাত্র অসংখ্য মানুষের প্রাণ গিয়েছে তাই নয়, জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই পড়েছে করোনার কোপ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, যাতায়াত এমনকি অতিমারীর কোপ থেকে বাদ যায়নি রাজনীতিও। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর করোনার ভ্যাকসিন এসেছে ঠিকই, কিন্তু এবার তার বণ্টন প্রক্রিয়ার জেরে তৈরি হচ্ছে নানা সমস্যা।
করোনা ভাইরাসের টিকাকরণ প্রক্রিয়া আগামী ১৬ তারিখ থেকেই প্রতি রাজ্যে শুরু হতে চলেছে। এই টিকা বণ্টনের জেরে এবার কোপ পড়ল পোলিওর টিকাদানের উপর। সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, রাজ্যের তরফে জেলায় জেলায় পোলিও টিকা পাঠিয়ে দেওয়া হলেও হঠাৎই তাতে স্থগিতাদেশ দিয়েছে কেন্দ্র৷ করোনা টিকাকরণ প্রক্রিয়ার জেরে জটিলতা তৈরি হতে পারে, এই আশঙ্কাতেই পোলিও টিকাদান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র৷
বস্তুত, আগামী রবিবার অর্থাৎ ১৭ জানুয়ারি জাতীয় পোলিও টিকাকরণ দিবস পালিত হয়। সেই অনুযায়ী সেদিন রাজ্য জুড়ে টিকাদানের কথা মাথায় রেখে স্বাস্থ্য দপ্তরের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই জেলাগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রায় এক কোটি পোলিও ভ্যাকসিন (pulse polio vaccine vials)। কিন্তু কেন্দ্র স্বাস্থ্য মন্ত্রক আপাতত তার উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। আগামী রবিবারের পোলিও টিকাদানকে কেন্দ্র করে স্বভাবতই তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি।
জেলাগুলিতে পৌঁছোনো পোলিও ভ্যাকসিন আপতত সেখানকার কোল্ড চেন ইউনিটেই রাখা থাকবে। কেন্দ্রের তরফ থেকে পরবর্তী নির্দেশ এলেই তা ব্যবহার করা যাবে বলে জানানো হয়েছে। এ ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “দুটো ভ্যাকসিনের সংরক্ষণের জন্য সম্পূর্ণ ভিন্ন দুরকম তাপমাত্রার প্রয়োজন হয়। পোলিও ভ্যাকসিন সংরক্ষিত হয় -২৫°C তাপমাত্রায়, আর করোনা ভ্যাকসিন সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজন ২° থেকে ৮° সেলসিয়াস তাপমাত্রা।” জটিলতার কথা মাথায় রেখেই আগেভাগে পোলিও ভ্যাকসিন জেলায় পাঠিয়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক।
বাগবাজারে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের গুদামেই আপাতত পোলিও ভ্যাকসিনগুলি রাখা হয়েছে৷ আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে কেন্দ্রের তরফে পোলিও ভ্যাকসিনের জন্য সম্ভাব্য নির্দেশ আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।