আদালতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করাটা কি রাজনীতির নয়া ট্রেন্ড? শাস্তি হবে অভিষেকের?

আদালতের বিরুদ্ধে অভিযোগ করাটা কি রাজনীতির নয়া ট্রেন্ড? শাস্তি হবে অভিষেকের?

নিজস্ব প্রতিনিধি:  কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচারপতির সরাসরি নাম করে কিছুদিন আগেই নজিরবিহীন আক্রমণ করেছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। যে বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। তৃণমূল সাংসদ যে এভাবে একজন বিচারপতিকে নিশানা করবেন সেটা কেউ ভাবতেও পারেননি। উল্লেখ্য আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে একজন সাংসদের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা থাকে। সেই জায়গা থেকে অভিষেক যেভাবে বিচার ব্যবস্থাকে নজিরবিহীন আক্রমণ করেছেন তাতে যথেষ্ট বিতর্ক তৈরি হয়েছে। আর বিচার বিভাগ ও আদালত সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্যের জেরে অভিষেকের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন একাধিক আইনজীবী। তাঁরা প্রধান বিচারপতি টিএস শিবাজ্ঞানম ও বিচারপতি হিরন্ময় ভট্রাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চের কাছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। অভিষেকের বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করার আর্জিও জানিয়েছেন ওই আইনজীবীরা। 

 

শুধু অভিষেক একা নন, এর আগে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ একই ভাবে কলকাতা হাইকোর্টের একাধিক বিচারপতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। তীব্র আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করে সরব হতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূল মুখপাত্রকে। তখনও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হয়। তাই প্রশ্ন, বিচার ব্যবস্থাকে আক্রমণ করাটা কি রাজনীতিতে একটা ট্রেন্ড হয়ে যাচ্ছে? সকলেই বোঝেন এটা একেবারেই বাঞ্ছনীয় নয়। কিন্তু মাঝেমধ্যেই সেটিকে এড়ানো যাচ্ছে না। 

আইনজীবী মহলের একাংশের মতে, অভিষেক যে মন্তব্য করেছেন তাতে অবশ্যই তাঁকে শাস্তির মুখে পড়তে হবে। এভাবে বিচারপতির নাম করে আদালতকে আক্রমণ করা যায় না, বিচারপতির  সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায় না। এমনটাই মনে করছেন আইনজীবীদের বড় অংশ। এই বিষয়গুলি অভিষেক জানেন, সেটাই স্বাভাবিক। এরপরেও তিনি আদালত সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করেছেন। এখন প্রশ্ন, তৃণমূল কি এই বক্তব্যকে মান্যতা দেবে? যদিও এটাও ঠিক যে তৃণমূল বলতে অর্থাৎ শীর্ষস্তরের নেতৃত্ব বলতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেককেই বোঝায়। অভিষেক দলের ‘সেকেন্ড ইন কমান্ড’। তাই যে বিতর্ক তৈরি হয়েছে সেই বিষয়টি নিয়ে কি এবার মুখ খুলবেন মুখ্যমন্ত্রী? দলীয় স্তর থেকে এ বিষয়ে অভিষেককে কী তিনি ‘সতর্ক’ করে দেবেন? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠতে শুরু করেছে। 

ঘটনা হল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় শাসকদলের প্রথম সারির নেতা। তাই প্রতিটি কথা তাঁর ভেবে চিন্তে বলা উচিত বলে রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন। শাসক দলকে সবসময়ই দায়িত্ববান হতে হয়। তাদের এমন কিছু আচরণ করা উচিত নয় যাতে তারা প্রশ্নের মুখে পড়ে, এমনটাই মত সবার। সেই জায়গা থেকে অভিষেক দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন বলে বিরোধীদের অভিযোগ। এই পরিস্থিতিতে একাধিক আইনজীবী অভিষেকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ এনে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন। আগামী দিনে সেই বিষয়টি কোন দিকে গড়ায় তা নিয়ে যথেষ্ট কৌতূহল তৈরি হয়েছে সব মহলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − 7 =