চুচুঁড়া: কিছুদিন আগেই সিঙ্গুরে শিল্প গড়তে টাটাকে বাধা দেওয়ার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন প্রাক্তন তৃণমূল নেতা তথা বিজেপির কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুকুল রায়। এমনকি রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় এলে প্রধানমন্ত্রীকে বলে তিনি সিঙ্গুরে ফের শিল্প ফিরিয়ে আনার আশ্বাসও দিয়েছিলেন। একুশের নির্বাচনের আগে সিঙ্গুরে শিল্প নিয়ে আগ্রহ দেখানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকেও। সেই সূত্রেই এবার সামনে এল বড় তথ্য।
সিঙ্গুরে শিল্প গড়তে আগ্রহী দেশ বিদেশের প্রায় ১০০টি শিল্প প্রতিষ্ঠান, এদিন এমনটাই জানা গেছে বিশেষ সূত্রের খবরে। শুধু তাই নয়, সিঙ্গুরে আসতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জনপ্রিয় জাপানি সংস্থাও। তবে সিঙ্গুর শিল্পের জন্য জমির কোনো দাম এখনও পর্যন্ত চূড়ান্ত করা হয়নি বলে জানিয়েছে সূত্র।
বস্তুত, সিঙ্গুরে শিল্প গড়তে যে বিশেষ ভাবে আগ্রহী রাজ্য সরকার, সেই বার্তা আগেই দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জমি বন্টন নিয়ে আগ্রহপত্রও আহ্বান করা হয়েছে রাজ্যের তরফে। সেই ডাকে সাড়া দিয়েই এখনও পর্যন্ত জাপানি কোম্পানি সহ অন্তত ১০০ সংস্থা এ ব্যাপারে তাদের আগ্রহ জানিয়েছে।
সিঙ্গুরে জমির দাম নিয়ে সূত্রের খবর মারফত জানা গেছে, প্রতি কাঠা জমির জন্য প্রায় ৫ থেকে সাড়ে ৬ লক্ষ টাকা ধার্য করার প্রস্তাব দিয়েছেন সরকারি কর্তারা। তবে এ ব্যাপারে রাজ্যের অর্থ দপ্তরই নেবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে সিঙ্গুরের তাৎপর্য অজানা নেই কারোরই। দশ বছর আগে এই সিঙ্গুর এবং সেখানে শিল্প গড়াকে কেন্দ্র করে যে বিশাল রাজনৈতিক মতানৈক্যের সাক্ষী থেকেছিল গোটা রাজ্য, তার জেরেই ঘটে গিয়েছিল পটপরিবর্তন। সিঙ্গুরে ন্যানো কারখানা তৈরির জন্য টাটা গ্রুপকে আহ্বান জানিয়েছিলেন তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। কিন্তু সেদিনের সেই পরিকল্পনায় বাধ সেধেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিঙ্গুরের তিন ফসলি জমিতে শিল্প গড়া যাবে না, এই মর্মে তিনি যে আন্দোলনের ঢেউ তুলেছিলেন তার ফল হয়েছিল বাংলায় দীর্ঘ ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান।
কিন্তু ২০১১ সালের সেই নির্বাচনের পর কেটে গিয়েছে ১০টা বছর। একুশের ভোটের আগে বঙ্গ রাজনীতির দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে সেদিনের সিঙ্গুর আন্দোলনের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমি এখন খানিক নড়বড়ে। তাই ভোটের আগে ফের সিঙ্গুরে শিল্পকেই পাখির চোখ করেছে রাজ্য সরকার।