কলকাতা: গত সপ্তাহের শেষ দিকে করোনা চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনা নিয়ে রাজ্য সরকারের দুর্নীতি নিয়ে প্রকাশ্যে অভিযোগ করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। এ নিয়ে প্রবল আলোড়িত হয়েছিল রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যপাল সরাসরি কাটমানি শব্দের প্রয়োগ করে বলেছিলেন, চিকিৎসার সরঞ্জাম কেনাকাটায় কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগে হওয়া তদন্তের কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই, দাবি করেছিলেন তাও। তিনি টুইট করে লেখেন, একমাত্র স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ তদন্তই অপরাধীদের ধরতে পারবে। আজ রাজ্যপালের এই বিস্ফোরক অভিমতের কড়া জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিন সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বললেন, ‘আমাদের সরকার যথেষ্ট স্বচ্ছতা নিয়ে কাজ করে। কিছু কিছু লোক আছে যাদের কাজকর্ম নেই, সারাদিন ঘেউ ঘেউ করে ঘুরে বেড়ায়।’ বলা বাহুল্য নাম না করে রাজ্যপালকে আক্রমণ করলেন মুখ্যমন্ত্রী। এরপর তিনি জানিয়ে দিলেন, রাজ্য সরকারের প্রতিটি বিভাগে অডিট করার লোক রয়েছে। কোনও রকম আর্থিক অনিয়ম হচ্ছে কি না তা দেখারও লোক রাখা রয়েছে। ৩৪ বছরের সিপিএম রাজত্ব থেকে বেরিয়ে এসে স্বচ্ছতার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করলেন মমতা।
তাঁর কথায়, গত একবছর ধরে অতিমারি, আমফান, ফনী সামলে চলেছে রাজ্য সরকার। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টায় কোনও ত্রুটি নেই। তা সত্ত্বেও সরকারের দিকে আঙুল ওঠায় বিস্মিত মমতা। তিনি বললেন, ‘কেউ কেউ দেখছি কত মাস্ক কিনেছে রাজ্য সরকার তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। অন্যকে প্রশ্ন করার আগে আপনি বলুন দিন টেক কেয়ার ফান্ডে কত টাকা জমা হয়েছে।’ এরপর তিনি দাই করেন, সরকারের কোনও দফতরের কাজেই কোনও রাজনৈতিক নাকগলানো নেই। তারা স্বাধীনভাবে কাজ করে। আমজনতার অভিযোগের ভিত্তিতেও তদন্ত করা হয়।
এরপর কেন্দ্র সরকারের ভেজাল পিপিই কিট কেনার প্রসঙ্গ তুলে আক্রমণ করতে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আইসিএমআর তো জানিয়ে দিয়েছিল ওই কিট ভেজাল। তার মানে কোথাও না কোথাও গণ্ডগোল ছিলই। তাই কেউ যেন প্রশ্ন না করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার মাস্ক কোথা থেকে কিনছে। আগে তো জিজ্ঞাসা করব তোমরা সেই কিট কোথা থেকে কিনেছিলে। আক্রমণ সেরে অবশ্য নিজের দফতরগুলিকে ফের স্বচ্ছতা রাখার বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধায়।